মাঠের তারকা ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ইকবাল ফারুক (৫১)। মাত্র ৭ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে ৯ শতক জায়গায় নার্সারি শুরু করেন ২০০১ সালে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এখন নার্সারি ব্যবসাতে কোটিপতি ইকবাল।

বর্তমানে ২ একর জায়গায়  ‘বনরূপা নার্সারি’ গড়ে তুলেছেন ইকবাল। ভবিষ্যতে আরও ৩ একর জায়গাজুড়ে নার্সারি করার পরিকল্পনা আছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, মিরসরাই উপজেলা ছাড়া সীতাকুন্ডু, ফটিকছড়ি, রামগড়, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়াসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ এসে চারা কিনতে আসেন অসংখ্য মানুষ।

ইকবাল ফারুক মিরসরাই সদর ইউনিয়নের কিসমত জাফরাবাদ গ্রামের মৃত মজিবুল হকের ছেলে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে নার্সারি পেশাকে আয়ের একমাত্র উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রথমে কিছু বনজ ও ফলদ চারা দিয়ে নার্সারি শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পরিধি।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের চারা ও বীজ সংগ্রহ করেন। এ ব্যবসায় সফলতা পাওয়ায় এখন তিনি কোটিপতি। ফারুকের নার্সারি ব্যবসার সফলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক এ পেশায় অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

ঘাস চাষ করেই কোটিপতি গফুর!

পাঙ্গাস চাষে কোটিপতি সিঙ্গাপুর ফেরত বেলায়েত

মাছ চাষে কোটিপতি ফরহাদ, চলতি বছরে ৭০ লাখ!

১২১টি তেলিয়া মাছে রাতারাতি কোটিপতি জেলে

ইকবাল ফারুক বলেন, ‘বর্তমানে ২ একর জমিতে নার্সারি আছে। এখানে প্রায় দেড় শতাধিক বিভিন্ন ফলদ, বনজ ও ওষধি চারা আছে। বিভিন্ন জাতের বনজ চারা ছাড়াও দেশি-বিদেশি জাতের আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, বেদানা, কমলা, আমড়া, শরিফা, লেবু, জাম্বুরা, সফেদা, মাল্টা, বরই, কামরাঙা, মিষ্টি তেতুল, চালতা, লিচু, বেল, লটকনের চারা আছে।

তিনি আরও বলেন, নার্সারি আমার ধ্যান-জ্ঞান, জীবনের অংশ। ২০০১ সালে মাত্র ৭ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নার্সারি শুরু করেছি। আমার কাছে এখন প্রায় কোটি টাকা পুঁজি আছে। এ ছাড়া আমি আরেকটি জায়গায় বিশাল পরিসরে নার্সারি করার পরিকল্পনা নিয়েছি। নার্সারি গড়ে তোলার পর শুরুতে কেউ কেউ তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলেও পরে অনেকেই বিভিন্ন সহযোগিতা করেছেন। নার্সারি করে ৬০ লাখ টাকা খরচ করে একটি বাড়ি করেছি। আমার নার্সারিতে সারাবছর ৬-৭ জন শ্রমিক কাজ করে। মৌসুমে ২২-২৫ জন শ্রমিক কাজ করেন।

আমের জাতের মধ্যে হাঁড়িভাঙা, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হিমসাগর, গুটি, ফজলি, গৌরমতি, কাঠিমণ, বারি-৪, বেনানা ম্যাঙ্গো, চিয়াংমাই, চাকাপাতসহ প্রায় ৩০ জাতের চারা আছে। ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাসনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়া, বেলি, গন্ধরাজ, জবা, পাতাবাহার, ঝাউসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা আছে। এ ছাড়া এখানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির ওষধি গাছও।

ইকবাল ফারুক বলেন, আমার নার্সারি থেকে বড় বড় প্রতিষ্ঠান চারা নিয়েছে। এ ছাড়া গতবছর স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুব রহমান রুহেল ১ লাখ ১০ হাজার চারা নিয়েছেন। চলতি বছর বেচাকেনা একেবারে কম। করোনার পর ১ বছর ভালো বিক্রি করলেও এ বছর কম বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, নার্সারি লাভজনক ব্যবসা। অনেক বেকার নার্সারি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। মিরসরাই উপজেলায়ও দিন দিন নার্সারির সংখ্যা বাড়ছে। যারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চান, আমরা তাদের সহযোগিতা দিয়ে থাকি। নার্সারি ব্যবসাতে কোটিপতি ইকবাল সংবাদের তথ্য জাগো নিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ