সজিবুল হৃদয়, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:  ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ায় বাড়ির পাশে ছোট্ট পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন নাটোরের লালপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন (৩৫)। কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা, আর সততার মাধ্যমে আজ তিনি কোটিপতি মৎস্যচাষি। চলতি বছরে ১০ টি পুকুর থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন তিনি।

অভাব অনাটনে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েই স্কুল ছাড়তে হয়েছিল ফরহাদের। দুই বেলা দুমুঠো খাবার নিশ্চিত করতে ২০১০ সালের দিকে পুকুর লিজ নিয়ে ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী পিতার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ।

পড়তে পারেন: কসাই থেকে মাছ চাষে কোটিপতি আইনাল

উপজেলা মৎস্য বিভাগের পরামর্শে ও প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়াতে থাকেন পুকুরের পরিমাণ। বর্তমানে ৩.৩৫ হেক্টর আয়তনের ১০টি পুকুরে তিনি রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, সরপুঁটি, বাটা, কার্প জাতীয় মাছের চাষ করছেন। নিজের ভাগ্যোন্নয়নের পাশাপাশি তিনি এলাকার মৎস্য চাষিদেরও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে মৎস্য বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও পরিদর্শন করেছেন তার মৎস্য খামার।

ফরহাদ হোসেন বলেন, আত্মপ্রত্যয় থাকলে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। আমি এ বছর ৩৫ মে.টন মাছ উৎপাদন প্রায় ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার বেশি লাভ রয়েছে। এছাড়া বাজার ব্যবস্থা উন্নত এবং মাছ রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে এখানকার মৎস্যচাষি আরো বেশি উপকৃত হবেন এবং বেকার যুবকরাও আরো বেশি মাছ চাষে ঝুঁকবে।

পড়তে পারেন: কিভাবে মাছ চাষ শুরু করবেন, পরামর্শ কোথায় পাবেন?

ফরহাদের এ কীর্তিতে মুগ্ধ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারাও। লালপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু সামা জানান, মাছ চাষে ফরহাদ অনন্য সফলতা দেখিয়েছেন। এখানকার অনেক বেকার যুবকই এখন এ মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বাজারে এর চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় একদিকে মৎস্যচাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছেন। দেশে অসংখ্য জলাশয় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে, সেগুলো মাছ চাষের আওতায় আনা হলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ