অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটি এখন পর্যন্ত প্রায় এক ডজন দেশে ১৮ লাখ টন গম রফতানি করেছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির খাদ্য সচিব শুধাংশু পান্ডে।

ভারত থেকে গম আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছেন দ্য হিন্দু প্রত্রিকা। ভারতের সরকারি এক কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, অর্ধ ডজনেরও বেশি দেশ ১৫ লাখ টনেরও বেশি সরবরাহের জন্য ভারতের দৃষ্টি আর্কষণ করেছে।

খাদ্য সচিব শুধাংশু পান্ডে বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন মানবিক সহায়তা হিসেবে আফগানিস্তানে ৫০ হাজার টন গম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ভারত। এরই মধ্যে ৩৩ হাজার টন সরবরাহ করা হয়েছে।

পড়তে পারেন: গম উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়বে রাশিয়া

এক বিবৃতিতে পান্ডে বলেন, ১৩৮ কোটি জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের দায়ভার সত্ত্বেও বৈশ্বিক চাহিদাকে সব সময় বিবেচনায় রাখে ভারত। ভারত সরকার স্থানীয় বাজারে প্রাপ্যতা সুরক্ষায় মূলত রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি যেসব দেশে সংকট, সেসব দেশে সরবরাহ নিশ্চিত করার ব্যাপারেও সচেষ্ট সরকার। প্রকৃতপক্ষে যেসব প্রতিবেশী দেশে চাহিদা কিংবা যেসব দেশে খাদ্য ঘাটতি আছে, সেসব দেশে ভারত সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্ষেত্রে সরকার টু সরকার ম্যাকানিজম অনুসরণ করা হচ্ছে।

রফতানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারত বিভিন্ন দেশে ১৮ লাখ টন গম রফতানি করেছে। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ইসরায়েল, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, ওমান, ফিলিপাইন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা, সুদান, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম ও ইয়েমেনে এসব গম রফতানি করা হয়। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশগুলোয় রফতানি চার গুণ বেড়েছে।

পড়তে পারেন: বিশ্বের শীর্ষ গম রফতানিকারক আর্জেন্টিনায় কমবে গম উৎপাদন

১৩ মে ভারত সরকার গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ওইদিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর। সব জাতের গমই এ নিষেধাজ্ঞার আওতায়। ভারতে তীব্র দাবদাহে গম আবাদ ও ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে দেশটিতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। পাশাপাশি যুদ্ধসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় বাজারে এসব পণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত সব মিলিয়ে ৭০ লাখ টন গম রফতানি করেছে। সাধারণত দেশটি প্রতি বছর গড়ে ২০ লাখ টন গম রফতানি করে, যা শস্যটির বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১ শতাংশ।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট গম সংকটে ভুক্তভোগী আমদানিনির্ভর দেশগুলো। এর মধ্যে নিম্ন আয়ের দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। পরিস্থিতি উত্তরণে ভারতের সহায়তা চেয়েছে বেশকিছু দেশ। এসব দেশ থেকে ১৫ লাখ টনেরও বেশি গম সরবরাহের অনুরোধ পেয়েছে ভারত। সম্প্রতি ভারত সরকার ও ব্যবসায়ীরা এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।

পান্ডে বলেন, ভারত করোনা মহামারীর মধ্যেও খাদ্য সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশকে গম, চাল, ডালসহ খাদ্যসহায়তা দিয়েছিল। আফগানিস্তান, জিবুতি, লেবানন, মাদাগাস্কার, ইরিত্রিয়া, মালদ্বীপ, সিরিয়া, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়েসহ বেশ কয়েকটি দেশে সহায়তা দেয়া হয়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ