পঞ্চগড় প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পঞ্চগড়ে জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হালিম উদ্দীন (৬০) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন তার নিকট আত্মীয় ৭ জন। আহতদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টায় জেলার সদর উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত হালিম উদ্দীন ওই এলাকার বছির উদ্দিনের ছেলে।

আহতরা হলেন, নিহত হালিম উদ্দীনের স্ত্রী আলেমা খাতুন (৫৫), ছেলে হাইবুল ইসলাম (৩২), ওই এলাকার ধনির উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সামাদ (৪০), ধনির উদ্দিনের স্ত্রী সফিজান (৬০), চেহারুর ছেলে মহির উদ্দিন (৬৫), মহির উদ্দিনের স্ত্রী সালেমা খাতুন (৬০), আব্দুল আলিমের স্ত্রী মল্লিকা খাতুন (৩০)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকায় ২২ বিঘা জমি নিয়ে হালিম উদ্দীন ও তার ওয়ারিসদের সাথে একই ইউনিয়নের গাড়িয়ানপাড়া এলাকার মনসুর আলী ও তার ওয়ারিসদের প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে।

পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ওই জমিতে হালিম উদ্দীনের ও তার ভাইয়েরা ভোগ দখল করে মরিচ, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে আসছেন।

বৃহস্পতিবার মনসুর আলী তার ছেলে সফিয়ার ও মুসাসহ দলবল নিয়ে বিরোধীয় ওই জমি দখল করতে যায়। এ সময় তারা ওই জমিতে হালিম উদ্দীনের চাষ করা মরিচ ও ভূট্টার গাছ কাটতে শুরু করে। এতে হালিম উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন বাধা প্রদান করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই হালিম উদ্দীন নিহত হন। এছাড়া হালিম উদ্দীনের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে আহত হয় আরও ৭ জন। আহতরা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাস্থলেই হালিম উদ্দীনের মৃত্যু হলে মনসুর আলী পক্ষের লোকজন সেখান থেকে সটকে পড়ে।

নিহত হালিম উদ্দীনের মেয়ে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার বাবা আমাদের জমিতে মরিচ তুলতেছিলেন এমন সময় মনসুর তার লোকজন নিয়ে আমাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট করতে থাকে। বাবা সহ আমরা বাঁধা দিতে গেলে আমাদের উপর হামলা করে। ওখানেই আমার বাবা মারা যায়। আমার বাবাকে ওরা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

গড়িনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাবুল ইসলাম বলেন, ‘ওই জমিটা নিয়ে দুই পক্ষের প্রায় ৩০ বছর ধরে বিরোধ চলতেছে। তারা হাইকোর্ট পর্যন্ত মামলা-মোকদ্দমা চালিয়েছে। একধিকবার স্থানীয়ভাবে শালিসের চেষ্টা করা হয়েছে কিছুতেই কাজ হয়নি। আজকে আবার হঠাৎ এমন ঘটনা শুনে হাসপাতালে দেখতে এসেছি।’

পঞ্চগড় সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) রঞ্জু আহম্মেদ বলেন, ‘জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে একজন নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা নথিভূক্ত হলেই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’