ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: উচ্চফলনশীল বারি কলা-১ জাতের কলা দেখতে উজ্জ্বল হলুদ রঙের, খেতে মিষ্টি। এ জাতের ফলন একটু বেশিই হয়। পুকুরের পাড়, নদীর ধার কিংবা রাস্তার পাশের পরিত্যক্ত জমিতেও চাষ করতে পারেন উচ্চফলনশীল বারি কলা-১।

তবে বারি কলা-২ জাতের কলা কাঁচা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ জাতের আকার মাঝারি ও রং গাঢ় সবুজ প্রকৃতির। এর ফলন বারি কলা-১ জাতের থেকে একটু কম। বারি কলা-৩ জাতটিও মাঝারি আকারের। এ জাতের কলা পাকা হয়। সম্পূর্ণ বীজছাড়া। কলার শাঁস মিষ্টি ও আঠালো। এর গড় ফলন বারি কলা-২ জাতের মতোই।

পড়তে পারেন: কলা চাষে ঝুঁকছেন চারঘাটের মাছচাষিরা

প্রায় সব ধরনের মাটিতে কলার চাষ করা যায়। তবে পর্যাপ্ত রস আছে এমন মাটিতে কলা চাষ করা উত্তম। এছাড়া সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিও নির্বাচন করা যেতে পারে। নিচু জমি হলেও সমস্যা নেই। খেয়াল রাখতে হবে জমিটি যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাসপূর্ণ হয়। শীতকাল ও আর্দ্রতাযুক্ত জলবায়ুতে কলাগাছের বৃদ্ধি ভালো হয়।

কলার চারা দুই রকমের অসি চারা ও পানি চারা। অসি চারার পাতা চিকন, গোড়ার দিকে মোটা ও গোলাকার। পানির চারার পাতা চওড়া, কাণ্ড চিকন ও দুর্বল। তবে চাষের জন্য অসি চারা উত্তম।

পড়তে পারেন: কলার পাতা হলুদ হয়ে ভেঙে পড়া রোগের প্রতিকার

কলার চারা সাধারণত বছরে তিন মৌসুমে রোপণ করা উত্তম। প্রথম মৌসুম মধ্য জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ। দ্বিতীয় মৌসুম মধ্য মার্চ থেকে মধ্য মে। তৃতীয় মৌসুম মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য নভেম্বর। কলা চাষাবাদ করতে সাত-আটবার চাষ দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হয়। তারপর জৈবসার বিঘা প্রতি হিসেবে প্রয়োগ করতে হয়।

অতপর ২২ মিটার দূরত্বে গর্ত খনন করতে হবে। প্রতিটি গর্তে ছয় কেজি গোবর, ৫০০ গ্রাম খৈল, ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমপি, ১০০ গ্রাম জিপসাম, ১০ গ্রাম জিংক এবং ৫ গ্রাম বরিক এসিড প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। ১৫ দিন পর প্রতিটি গর্তে নির্ধারিত জাতের সতেজ চারা রোপণ করতে হবে।

পড়তে পারেন: দেশে তিন লাখ রপ্তানিযোগ্য আনারসের চাষ শুরু

কলা চাষে তেমন পরিশ্রম না থাকলেও ভালো ফলনের জন্য শ্রম দিতে হবে। গাছ রোপণের পর পরিচর্যায় অবশ্যই আন্তরিক হতে হবে। তাহলে যথাসময়ে অধিক ফল সংগ্রহ করা যাবে। শুকনো মৌসুমে গাছ রোপণ করলে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। আর বর্ষাকালে রোপণ করলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। কলাগাছে প্রচুর পানির প্রয়োজন।

তবে অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। তাই নিষ্কাশনের জন্য নালা কেটে রাখতে হবে। গাছ বৃদ্ধির প্রাথমিক অবস্থায় বিশেষ করে রোপণের প্রথম চার মাস কলা বাগান অবশ্যই আগাছামুক্ত রাখতে হবে। কলার পুরোনো পাতা পরিষ্কার করতে হবে।

পড়তে পারেন: জনপ্রিয় লাল ড্রাগন চাষে অধিক লাভ, এক বছরেই ফলন

রোপণের পর ১১ থেকে ১৫ মাসের মধ্যেই সাধারণত সব জাতের কলা পরিপক্ব হয়ে ওঠে। গাছের কুঁড়ি থেকে পরিপক্ব কলা কেটে সাবধানে নামাতে হবে। কলার থোড় সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে চটের বস্তা বিছিয়ে এর ওপরে রেখে দিতে হবে। থোড় কেটে নেওয়ার পর গাছের মাঝ বরাবর কেটে ফেলতে হবে। সেখান থেকে আবার নতুন চারা গজাবে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ