নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ এখনো পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারে না, পর্যাপ্ত খাবার কিনতে দৈনিক প্রয়োজনীয় আয় করতে পারেন না প্রায় ২ কোটি ৮০ মানুষ। ৩৬ লক্ষ শিশু এখনো অপুষ্ঠিতে ভোগে। এই বিশাল জনগোষ্ঠিকে অপুষ্ট ও অর্ধভুক্ত রেখে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

আজ রোবরার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে খাদ্য অধিকার কংগ্রেসে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, জনগণের খাদ্য নিরাপত্তাকে কেবলমাত্র কর্মসূচি হিসেবে না দেখে অধিকারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেখতে হবে। এজন্য খাদ্য অধিকারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং সেই মোতাবেক খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করতে হবে।

খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) আয়োজিত এই কংগ্রেসে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ দারা। সভাপতিত্ব করেন ইরি বাংলাদেশের সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর ও খানির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, খাদ্য অধিকার সম্পর্কিত সংসদীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সেলিনা জাহান লিটা, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলিজের উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলম খাঁন ও অর্থনীতিবিদ ড. এমএম আকাশ, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-হারভেস্টপ্লাসের কনসালটেন্ট ড. এম এ মজিদ।

সভায় বক্তারা বলেন, মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পূর্বশর্তই হচ্ছে তাঁর খাদ্যের অধিকার পূরণ করা। এজন্য দেশে আইনী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সকল মানুষের খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতি, বাস্তবায়ন কৌশল এবং সমন্বিত কৃষি, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির দিক নির্দেশনা থাকবে।

সরকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি পরিচালনা করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় তা বিলি-বন্টন হয়ে যায়, ফলে এসব কর্মসূচির সুবিধা প্রকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠি পাচ্ছে না। তাই, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সকল মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সম্মেলনে এমএম আকাশ বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা হতে হবে টেকসই, নিরাপদ, সুষম এবং ভেজাল মুক্ত। এগুলোকে খাদ্য অধিকারের সাথে একত্রিত করলে খাদ্য নিরাপত্তার পরিধি বাড়বে।

সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারি হিসাব মতে দেশে এখনো প্রায় ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র এবং ২ কোটি মানুষ অতিদরিদ্র অবস্থার মধ্যে বসবাস করে। খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নগর দরিদ্রদের বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে।

সম্মেলনে দুইজন সাংবাদিককে খানি খাদ্য অধিকার মিডিয়া ফেলোশিপ দেওয়া হয়। অতিথিরা ডেইল স্টারের ফিচার রাইটার শাহনেওয়াজ খান ও দৈনিক সমকালের সহসম্পাদক জাহিদুর রহমানের হাতে ফেলোশিপ সনদ, ক্রেস্ট তুলে দেয়। খানি সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।