অর্থ বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাজারে কোরবানি ঈদকে ঘিরে মশলার বাজার গরম হয়ে ওঠছে। ইতিমধ্যে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে একাধিক মসলাপণ্যের দাম ঊর্ধমুখি।

গত কয়েক দিনে জিরা, দারচিনি ও জয়ত্রীসহ আমদানি করা বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। হিসেব করে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে শুধু জয়ত্রীরই দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০০ টাকা।

এছাড়া জিরা ও দারচিনির কেজিতে দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৩৫ ও ২০ টাকা করে। ব্যবসায়ীদের বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানি করা এসব মসলাপণ্যের বুকিং দর বেড়েছে, যার প্রভাবে দেশের বাজারেও পণ্যগুলোর দাম বাড়ছে।

মসলার আড়ত ও পাইকারি দোকান সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। সপ্তাহ দুই আগেও এখানে পাইকারিতে পণ্যটির মূল্য ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা। সে হিসাবে এ সময়ের মধ্যে খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে জয়ত্রীর দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০০ টাকা।

খাতুনগঞ্জে একই সময়ে আমদানি করা দুই মসলাপণ্য জিরা ও দারচিনির দামও বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এখানে পাইকারিতে ভারত থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৯০-২৯৫ টাকায়। কেজিতে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বর্তমানে এটি বিক্রি হচ্ছে ৩২৫ টাকায়।

একই বাজারে সিরিয়া থেকে আমদানিকৃত জিরা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও ৩৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে সিরিয়া থেকে আনা প্রতি কেজি জিরার দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

বাজারে বর্তমানে দারচিনির দামও বেশ বাড়তির দিকে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চীন থেকে আনা দারচিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২৫-২৩০ টাকায়। ১৫ দিন আগেও বাজারে একই মানের দারচিনি ২০০-২১০ টাকায় দামে বিক্রি হয়েছিল।

সে হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে দারচিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা দারচিনির দামও বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভিয়েতনামের দারচিনি বিক্রি হয়েছিল ২৫০ টাকার নিচে। কিন্তু বর্তমানে এর দাম কখনো কখনো প্রতি কেজি ২৬৫ টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, কোরবানির ঈদ এলে বাজারে কিছু মসলাপণ্যের চাহিদা বাড়ে। একই সঙ্গে দামেরও পরিবর্তন হয়। তবে এবার বেশির ভাগ পণ্যের সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। ফলে এগুলোর দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব ও বাজেটে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব থাকায় কিছু মসলাপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

ব্যবসায়িরা বলছেন, চাহিদা বাড়লেও যেসব পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ যথেষ্ট আছে, সেগুলোর দাম স্থির রয়েছে। বিশেষ করে দেশের মোকাম থেকে যেসব পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ এসেছে, সেগুলোর দামে প্রভাব পড়েনি।

তারা বলছেন, প্রতি বছর কোরবানির সময় মসলার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে দামও বেড়ে যায়। কিন্তু এবার কোনো মসলাপণ্যের কোনো কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়নি। বরং বাড়তি চাহিদার অনেক পণ্যের দামও এখন বাজারে নিম্নমুখী রয়েছে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের দামের ওপর ভিত্তি করে আমদানি করা কিছু মসলাপণ্যের দাম বাড়তে দেখা গেছে। সূত্র: বণিক বার্তা।