মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চাষের মাছ উৎপাদনে সারাবিশ্বে আমরা তৃতীয় স্থানে। বাংলাদেশে মাছ চাষে বেশকিছু কৌশল অবলম্বন করে চাষিরা। পাঙ্গাস মাছকে খাওয়ানোর জন্য খাদ্য তৈরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে জানাব। আসুন আজ জেনে নেই-পাঙ্গাস মাছের পিলেট খাদ্য তৈরির কৌশল।

পাঙ্গাস মাছের বিভিন্ন জাত:
পাঙ্গাস মাছের জাতগুলোর মধ্যে দেশী পাঙ্গাস ও থাই পাঙ্গাস সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। চলুন এদের পরিচয় সম্পর্কে এখন কিছু তথ্য জেনে নেই

১. দেশী পাঙ্গাস: দেশী পাঙ্গাসের রূপালী রঙের পিঠের দিকে কালচে এবং পার্শ্ব রেখার ওপরে সামান্য ধূসর। এ মাছের দেহে কোন আঁশ নেই। এখনও আমাদের দেশীয় প্রজাতির পাঙ্গাস সুস্বাদু এবং বেশি মূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, বহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে এ মাছটি বেশি পাওয়া যায়। এরা প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন নদীসহ প্রধান নদীগুলোতে এর পোনা পাওয়া যায়।

২. থাই পাঙ্গাস: এদের আদিবাস থাইল্যান্ডে, কম্পুচিয়া, ভিয়েতনাম এবং পাশ্ববর্তী অঞ্চলের দেশে। আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ১৯৯৩ সনে বিদেশী এ প্রজাতির মাছের সফল প্রজনন করানো সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক চাষাবাদের ক্ষেত্রে থাই পাঙ্গাস একটি জনপ্রিয় নাম। দেশী পাঙ্গাসের চেয়ে এ জাত দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ মাছটি সর্বোচ্চ ১০-১২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

পাঙ্গাস মাছের খাদ্য তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহঃ

পাঙ্গাস মাছের খাদ্যকে পিলেট করে খাওয়ানো সবচেয়ে ভাল হয়। নিচে পাঙাশ মাছকে পিলেট খাদ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো দেওয়া হল-

পাঙ্গাস মাছকে খাদ্য খাওয়ানোর জন্য ১ টন হিসেবে নিচে উপাদানগুলো দেওয়া হলঃ

শুটকি অথবা ফিশমিল ১৫০ কেজি (৫০%=৭৫)

ডিওআরবি ১০০ কেজি (১৮%=১৮)

সোয়া মিল ২০০ কেজি (৪৪%=৮৮)

রাইস ব্রান ২০০ কেজি (১৪%=২৮)

এংকর ডাল ১২৫ কেজি (৩৬%=৪৫)

রেপসিড ১২৫ কেজি (৩৬%=৪৫)

লবণ ও ভিটামিন প্রিমিক্সআটা

আটা ১০০ কেজি (১০%=১০)

এই খাদ্য উপাদানের সাথে চিটাগুড়ও দেওয়া যেতে পারে।

উপরোক্ত উপায়ে পিলেট খাদ্য উপাদানগুলো নিয়ে পাঙ্গাস মাছকে পিলেট খাদ্য তৈরি করে খাওয়াতে হবে। উপরে উল্লেখিত খাদ্য উপাদানগুলোকে পিলেট বানিয়ে নিয়ে তারপর পাঙ্গাস মাছকে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হলে পাঙ্গাস মাছ খুব দ্রুত শারীরিকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

এই খাদ্য প্রদানের ফলে পাঙ্গাস মাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। এই উপাদানগুলো দিয়ে মাছের খাদ্য তৈরি করলে পাঙ্গাস মাছের চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ