নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পাট উৎপাদনে আগ্রহ বাড়াতে বিনা মূল্যে ৪০০ টন বীজ দেবে সরকার। কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হবে। সরকার মানসম্মত পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে পাট অধিদপ্তরের আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মেয়াদে বাস্তবায়ন করছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

তিনি আরোও বলেন, প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাট চাষের উন্নত কলাকৌশল সম্পর্কে চাষীদের প্রশিক্ষিত করা এবং সার্বিকভাবে গুণগত মানসম্মত পাট ও পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের ৩৯০ টন পাটবীজ বিনা মূল্যে বিতরণসহ সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে নির্মল ও দূষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বহুমুখী পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সব ধরনের সহায়তা করবে সরকার। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনায় পাটচাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ ও পাট শিল্পের সম্প্রসারণে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারে তৎপর থাকবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

গতকাল রোববার (৩১ মে ২০২০) নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থাগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী । এ সময় সভায় বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্প খাতকে আরো শক্তিশালী, নিরাপদ ও প্রতিযোগিতা সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। বস্ত্র খাতের ‘পোষক কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে বস্ত্র অধিদপ্তর তথা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

সভায় জানানো হয়, নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে তাঁতিদের সম্ভাব্য ক্ষতির মূল্যায়ন এবং এ ক্ষতি উত্তরণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। তাঁতিদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ এবং তাঁতের আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় তাঁতিদের ৫ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ৩০০ ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক তাঁতিদের ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক করোনা প্রাদুর্ভাবের সংকট মোকাবেলায় জরুরি কৃষিসেবা (বিএডিসি ও খাদ্য অধিদপ্তর সরকার ঘোষিত জরুরি কৃষিসেবার আওতাধীন) নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাটের বস্তা সরবরাহ নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রেখেছে।

উল্লেখ্য, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৭৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার আয় করেছে। এ অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি। আর এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যে চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয় পাট খাত।