নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: রাজধানীর মগবাজার দিলুরোড থেকে জুনায়েদ আহম্মেদ এসেছেন কারওয়ান বাজারে। কিনবেন মাছ, মাংস, সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। বাজারে পেঁয়াজ, আলু, পটলের দাম করছিলেন বিক্রেতার সাথে।

বিক্রেতা জানালেন, পটলের কেজি ৮০, আলু ৫৫ টাকা। পেঁয়াজ ১১০ টাকা। দাম শুনে অনেকটা হতবাক হলেন তিনি। কারণ গতসপ্তাহে কিনেছিলেন কম দামে।

শুধু কারওয়ান বাজার নয়; রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সবজির দামে আগুন। সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অন্যদিকে দাম কমেছে মাছের।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, হাতিঝিল বাজারে দেখা যায়, বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি ৭০-৮০ টাকার মধ্যে। অপরদিকে মুরগি ও গরুর মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাল-শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও একই আটি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। লাউশাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহের আগে লাউশাকের আটি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

একইভাবে বিশ টাকা আটির ডাটা শাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা আটিতে। মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা আটিতে। আর কলমি শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা আটি।

এছাড়া, সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম চড়া। প্রকারভেদে ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ২৪০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৭০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩০০ টাকা, কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকার আলু, পেঁয়াজ, ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। আলু কেজিপ্রতি বেড়েছে ৫ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। টঙ দোকানে ৬০ টাকা। বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা হাসান বলেন, শিমের দাম কমেছে। ১৮০ টাকা গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি। আজকে বিক্রি করছি ১৪০ টাকা। বাজারে সব সবজির দাম বেশি। বন্যার কারণে সবজির দাম বেড়েছে। তবে এবারের মতো সবজির দাম আমি কোনদিন দেখিনি।

মুরগির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। তবে মুরগির দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী হাসানুল ইসলাম বলেন, অরজিনাল সোনালি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা কেজি এবং লেয়ার ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

ডিম ব্যবসায়ী হালিম বলেন, মানুষের চাহিদার শীর্ষে দেশী ডিম। ভারতের লাল ডিম, আমদানি করা ডিম আকারে ছোট হওয়ায় কম কিনছে মানুষ। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা।

এছাড়া বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০-এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে কিছুটা দাম কমেছে।

কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাছের বাজারে ভিড় বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুজোর কারণে মাছের দাম কমেছে। প্রতি কেজি পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করলেও আজকে ১৬০- ১৫০ টাকা কেজি পাঙাস বিক্রি করছি।

এছাড়া, কাতল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা থেকে কমেছে কেজিতে ৫০ টাকা। পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৬০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা সব মাছের দাম কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

নিউজনাউ/এমএইচ/২০২৩