নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে। গোয়ালন্দের রাজবাড়ী জেলায়ও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে বাম্পার ফলনেও কৃষকের মুখে হাসি ফোটেনি। বরং মাথায় হাত পড়েছে। তারা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না।

এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে সার, বীজ, কীটনাশক, জমি চাষ ও দিনমজুরসহ খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে বিঘা প্রতি উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করে খরচও উঠছে না। বরং লোকসান গুণতে হচ্ছে চাষিদের।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, কৃষিসমৃদ্ধ রাজবাড়ী জেলা পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশে উৎপাদিত মোট পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপাদিত হয় এ জেলায়। চলতি বছরে জেলার পাঁচ উপজেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে চার হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে এক হাজার ৪১৫ হেক্টর কম।

বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের ঘিকমলা এলাকার পেঁয়াজচাষি হাবিবুর সরদার বলেন, আমি এ বছর এক একর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। বীজ কিনেছি দুই হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে।

পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি রহমান মণ্ডল বলেন, পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। তারপর আবার পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বেচতে গেলে ধলতার জন্য মণপ্রতি ৪ কেজি করে বাদ যায়। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। অর্থাৎ এক মণ পেঁয়াজ বিক্রি করলে কৃষক পাচ্ছে মাত্র ৩৬ কেজির দাম। আরেক পেঁয়াজ চাষি ইদ্রিস মিয়া বলেন, সরকারের উচিত পেঁয়াজ চাষে উৎপাদন খরচ যাতে কম হয়, সে ব্যবস্থা করা। সার, বীজ ও কীটনাশকের দর কমিয়ে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেয়া যায়।

রাজবাড়ীর বড় বাজারে পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে পাইকারী বাজারে এক হাজার ১০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এস এম শহীদ নূর আকবর বলেন, চলতি বছর এ জেলায় পাঁচ হাজার হেক্টরের ওপরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এর বেশির ভাগই উৎপাদিত হয় গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দি উপজেলায়।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ