মো. সাজ্জাদ হোসেন, যোগাযোগ ও মিডিয়া উপদেষ্টা, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল: ‘শিল্প বর্জ্য ও দূষণ’ বর্তমান ও আগামী পৃথিবীর ভয়াবহ একটি হুমকীর নাম। সারা পৃথিবীর বাঘা বাঘা পরিবেশ বিজ্ঞানীরা হন্নে হয়ে ছুটছেন এর সমাধানের পেছনে কারন শিল্প দূষণে মাটি, পানি, বাতাস এমনকি সামগ্রিক প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের রকমারি চাহিদা পূরণ, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা, শিল্প বিপ্লব, আর্থিক মুনাফা, বাণিজ্যিক আগ্রাসন সবকিছু মিলিয়ে এমন এক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় খুব সহজ নয় বলেই মনে করছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। 

শিল্প বিপ্লবের এ যুগে ঘরোয়া পরিবেশে পালিত মুরগিও যখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়, অতি সাধারন একটি কুটির শিল্প যখন বৃহৎ শিল্পের মর্যাদা লাভ করে তখন অনেক পরিবেশবাদিরই ভ্রু কুঁচকে যাবে সেটাই স্বাভাবিক! উন্নত দেশগুলোর মুরগির খামারগুলোতে বছরে যখন লাখ লাখ টন পোল্ট্রি লিটার, প্রসেসিং প্লান্টগুলোতে যখন মিলিয়নস অব টন ওয়েস্ট জমা হতে শুরু করে তখন এগুলোর অপসারন ডাম্পিং কিংবা সঠিক ব্যবস্থাপনা রীতিমত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

অবশ্য এ মাথাব্যথার ঔষধ আবিষ্কার করতে খুব বেশি সময় লাগেনি। আর সে কারণেই শিল্প বর্জ্য নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যে হৈচৈ চলছে সেখানে পোল্ট্রি বর্জ্য বড় কোন আলোচনায় আসেনা।

সাম্প্রতিক সময়গুলোতে পোল্ট্রি বর্জ্য অভিশাপ তো নয়ই বরং আশির্বাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশ্বের বড় বড় দেশ- যেখানে কৃষি জমির পরিমান অনেক বেশি- যেমন যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল প্রভৃতি দেশে জমির উর্বরতা বাড়াতে কম্পোষ্ট সার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পোল্ট্রি লিটার।

খুবই সহজ কিছু পদ্ধতি এবং সাধারন কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করে পোল্ট্রি লিটার রিসাইকেল করে জৈব সার উৎপাদন করা হচ্ছে এমনকি প্যাকেটজাত অবস্থায় বাজারজাতও করা হচ্ছে। তবে এটিই শেষ কথা নয়। পোল্ট্রি বর্জ্য থেকে যে কত কী উৎপাদিত হচ্ছে তা না জানলে অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। আজকের এ লেখায় খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে সে বিষয়েই আপনাদের কিছুটা জানানোর চেষ্টা করব।     

এ.ই নিউজের দেয়া এক তথ্য মতে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিতেই বছরে প্রায় ১১ বিলিয়ন পাউন্ড ওজনের বর্জ্য উৎপাদিত হয়। অবশ্য এটি ক’বছর আগের পরিসংখ্যান, বর্তমানে এ পরিমানও আরও অনেক বেশি। ২০১৫ সালের এক পরিসংখ্যান মতে শুধুমাত্র আলবামা রাজ্যেই বছরে ১০লাখ টন চিকেন ওয়েষ্ট উৎপাদিত হয়েছে।

২০১১ সালের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে- গ্লোবাল পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি’তে প্রতি বছর বর্জ্য হিসেবে উৎপাদিত হয় প্রায় ২ মিলিয়ন টন মুরগির পালক! কারো কারো মতে, এ পরিমান প্রায় ৫ মিলিয়ন টন!

একবার ভাবুন তো, যদি এভাবে বর্জ্য জমা হতে থাকে তবে মানুষ কিংবা পরিবেশের কি অবস্থা হবে? বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলছেন- দুশ্চিন্তার কিছু নেই বরং আছে সুখকর সংবাদ! কারণ পোল্ট্রি বর্জ্য এখন রিসাইকেল করে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্ট।

ডিমের খোসার ওপর সুক্ষ্ম কারুকার্য করা কিংবা ঘর সাজাতে ডিমের খোসার ব্যবহার অনেক আগে থেকে শুরু হলেও হাল জামানায় পোল্ট্রি শিল্পের বর্জ্য নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। এখন বলা হচ্ছে পোল্ট্রি শিল্পে বর্জ্য বলে কিছু নেই। 

পোল্ট্রি নিয়ে পৃথিবী জুড়েই আগ্রহের যেন শেষ নেই। সারা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের জন্য ডিম ও মুরগির মাংসের যোগান দিতে কৃষিভিত্তিক এ শিল্পের যেন কোন বিকল্প নেই। সমকালের পোল্ট্রি বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীরা ডিম ও মুরগির মাংসের উপকার নিয়ে নানাবিধ গবেষণা করছেন।

এমনকি নানাবিধ ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্ট তৈরিরও চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন- যেমন ওমেগা৩ সমৃদ্ধ ডিম। জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এডভান্সড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একদল গবেষক ২০১৭ সালের অক্টোবরে দাবি করেছেন যে- দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ডিম উৎপাদনেও তাঁরা সফলতা পেয়েছেন। তবে শুধু খাদ্য হিসেবেই নয় পোল্ট্রি এখন গুরুত্ব পাচ্ছে দারুণ সব পণ্য তৈরির উপকরণের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের যোগানদার হিসেবেও। 

পোল্ট্রি’র বিষ্টা বা লিটার থেকে এখন তৈরি হচ্ছে জৈব সার। রাসায়নিক সারের নেতিবাচক প্রভাবে বিশ্ব যখন বিকল্প খুঁজছে, তখন এমন একটি আবিষ্কার স্বস্তিদায়ক তো বটেই উপরন্তু কৃষির জন্যও আশির্বাদ ! বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে  পোল্ট্রি লিটার থেকে জৈব সারের উৎপাদন। শুধু তাই নয় পোল্ট্রি লিটার থেকে তৈরি হচ্ছে বায়োগ্যাস এবং বিদ্যুৎ।

বাংলাদেশের প্যারাগন পোল্ট্রি, কাজী ফার্মস প্রভৃতি দেশীয় কোম্পানীগুলো নিজস্ব খামারে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে অভিনব এ পদ্ধতিকে কাজে লাগাচ্ছে। পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ২০ হাজার মুরগির একটি ব্রয়লার খামার থেকে প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড বিস্টা বা লিটার পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর হিসাব মতে- দেশে বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন মুরগির মাংস এবং প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ ডিম উৎপাদিত হচ্ছে। কাজেই বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে আমাদের দেশে কী পরিমান মুরগির বিষ্টা উৎপাদিত হচ্ছে প্রতিদিন।  আর এ বর্জ্যকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে কৃষি প্রধান এবং স্বল্প আয়ের এদেশে কী যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে তা বলাই বাহুল্য।

মুরগির পালক দিয়েও তৈরি হচ্ছে দারুণ সব পণ্য! মুরগির পেটের দিকের নরম পালক দিয়ে তৈরি ‘ফেদার পিলো’বা বালিশ ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে ফেদার ফাইবার- যা উলের মতই আরামদায়ক, হালকা এবং স্থিতিস্থাপক। বায়োফাইবার এর ব্যবহার বহুবিধ। পলিমার কম্পোজিট তৈরিতে এর ব্যবহার উৎপাদন খরচ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

প্লাস্টিক, কাঠ, কংক্রিট এবং কার্ডবোর্ডে বায়োফাইবার ব্যবহারের ফলে ওজন অনেক কমছে বা হালকা হচ্ছে। এটি তাপ শোষণ করে এবং শব্দ লঘু করণেও দারুণ কার্যকর- বলছেন বিজ্ঞানীরা। 

নেবরাসকা-লিংকইন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক উইকি ইয়াং মুরগির পালক থেকে প্লাষ্টিক তৈরির জন্য কাজ করছেন। তাঁর মতে, এ প্লাষ্টিক হবে পচনশীল এবং পরিবেশ-বান্ধব। মুরগির পালক তৈরি হয় কেরাটিন দিয়ে। এই  কেরোটিন  হচ্ছে এমন এক প্রোটিন যা উল, চুল, হাতের নখ, খুর ইত্যাদি শক্ত করতে সহায়তা করে। উইকি ইয়াং এর অপর এক সহযোগী নরেন্দ্র রেড্ডী বলেছেন, তাঁদের তৈরি প্রোডাক্টটি আসলে থার্মোপ্লাস্টিক।

একে তাপ দিয়ে গলিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা সম্ভব। কেবল একবার নয় বহুবার গলানো এবং শক্ত করা যায়! পেট্রোলিয়াম-বেজ থার্মোপ্লাস্টিকে ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করা হলেও মুরগির পালক থেকে তৈরিকৃত থার্মোপ্লাস্টিক উৎপাদনে ফসিল ফুয়েল ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনা। এ থার্মোপ্লাস্টিক দিয়ে নাকি কাপ, প্লেট থেকে শুরু করে ফার্নিচার সবকিছুই তৈরি করা যায়।

নবায়নযোগ্য বিকল্প জ্বালানীর সন্ধানে: যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে প্রাথমিক জ্বালানী হিসেবে পোল্ট্রি এবং টার্কী লিটার ব্যবহার করা হচ্ছে। আয়ারল্যান্ডে বায়োমাস এনার্জি’র উৎস হিসেবে পোল্ট্রি লিটার ব্যবহৃত হচ্ছে।

ব্রয়লার হাউসের তাপ বা উষ্ণতা বাড়াতে আগে যেখানে ফসিল ফুয়েল বা এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করা হতো এখন সেখানে এর পরিবর্তে পোল্ট্রি লিটার ব্যবহার করা হচ্ছে।

‘এডভান্স ফাইবারস এন্ড পাউডারস’এর মত বড় বড় কোম্পানী তাদের ইলেকট্রিক্যাল ও হিটিং অ্যাপ্লিকেশনে জ্বালানী হিসেবে পোল্ট্রি লিটার ব্যবহার করছে। এর পাশাপাশি তারা একটিভেটেড কার্বন এবং সারও তৈরি করছে। 

পোল্ট্রি ফেদার মিল থেকে বায়োডিজেল: নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ‘চিকেন ফেদার মিল’ থেকে এক নতুন ধরনের বায়োডিজেল ফুয়েল তৈরি করেছেন। নেভাদা’র প্রফেসর মনোরঞ্জন মিশ্রা ও তাঁর সহকর্মীরা লক্ষ্য করেন যে চিকেন ফেদার মিলে মুরগির পালক ছাড়াও রক্তসহ প্রসেসিং এর সময় মুরগির শরীর থেকে ছড়ে যাওয়া আরও কিছু অংশ থাকে। চিকেন ফেদার মিলে প্রচুর পরিমান প্রোটিন উপাদান মিশ্রিত থাকে। আরও থাকে নাইট্রোজেন। সেজন্যই পশুখাদ্য এবং জৈব সার তৈরিতে এর ব্যবহার বাড়ছে।

তবে চিকেন ফেদার মিল সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অন্য কারণে। আর তা হলো প্রায় ১২% ফ্যাট কনটেন্ট (চর্বি)। বিজ্ঞানীদের অনুমান- শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিতেই যে পরিমান ফেদার মিল তৈরি হয় তা দিয়ে বছরে প্রায় ১৫৩ মিলিয়ন গ্যালন বায়োডিজেল উৎপাদন সম্ভব। আর সারাবিশ্বে যে পরিমান ফেদার মিল উৎপাদিত হয় তা দিয়ে বছরে প্রায় ৫৯৩ মিলিয়ন গ্যালন বায়োডিজেল উৎপাদন করা সম্ভব!

অবশ্য সাম্প্রতিক কালে পোল্ট্রি ফেদার মিল নিয়ে যে গবেষণাগুলো পরিচালিত হচ্ছে তার উদ্দেশ্য মূলত: তিনটি (১) উন্নতমানের কম্পোজিট ফাইবার তৈরি করা, (২) এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোপারটিজ দিয়ে ফাংশনাল কেরাটিন কম্পোজিট ফিল্ম তৈরি এবং (৩) কমবুশন কে কাজে লাগিয়ে ওয়েস্ট-টু-এনার্জি প্রসেস তৈরি করা।

আগামী পৃথিবীর এনার্জি ইফিসিয়েন্ট গ্রীণ বিল্ডিংস তৈরিতে ফাইবার বোর্ডের ব্যাপক ব্যবহার হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় এর ব্যবহারকে যথেষ্ঠ সহায়ক বিবেচনা করা হচ্ছে। ওদিকে ফুড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্ট্রি এবং মেডিক্যাল ডিভাইস প্যাকেজিং এ কেরাটিন কম্পোজিট ফিল্মের ব্যবহার নবদিগন্তের সূচনা করবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

কাজেই বলা যায় আগামীদিনগুলোতে ডিম, বাচ্চা, কিংবা মাংস উৎপাদনই কেবল নয় পোল্ট্রি শিল্পে যোগ হবে আরও সব নব নব আবিষ্কার। বাড়বে কর্মসংস্থান। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আগামীতে পোল্ট্রি শিল্পই হয়ত হবে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি।

পোল্টি আমার সাবজেক্ট নয়। আমার বিষয় হচ্ছে সাংবাদিকতা। বলতে পারেন অনেকটা শখের বসেই লিখতে বসেছি। পোল্ট্রি বিজ্ঞান নিয়ে যাঁরা পড়াশুনা করছেন, তাঁরা এ বিষয়ে আরও অনেক বেশি তথ্য ও জ্ঞান রাখেন। তাই তাঁরা যদি এ বিষয়গুলো নিয়ে লিখেন তবে আরও ইনডেপথ ইনফরমেশন জানতে পারবে সাধারন মানুষ। পোল্ট্রি’র সম্ভাবনাময় এ দিকগুলো নিয়ে লেখালেখির পরিধি বাড়ালে সতীর্থ কিংবা অনুজ’রা তো বটেই এমনকি পোল্ট্রি উদ্যোক্তা এবং পোল্ট্রি শিল্পে এখনও বিনিয়োগ করেননি এমন উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন। 

যে কথাটি এখানে উল্লেখ করা দরকার সেটি হচ্ছে পোল্ট্রি রিসাইক্লিং কিছুটা ভিন্ন ঘরানার প্রকল্প। তাছাড়া ডিম কিংবা মুরগি পালন করে যে পরিমান আয় করা যায় ঠিক এই মুহুর্তে বাংলাদেশে পোল্ট্রি রিসাইক্লিং থেকে সে ধরনের আয়ের ক্ষেত্রটিও বেশ সীমিত। অনেক দেশেই শুরুতে এ ধরনের প্রকল্পকে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমাদের দেশে যে দু’একজন উদ্যোক্তা এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই অর্থ লগ্নি করেছেন। কেউ কেউ হয়ত ভেবেছিলেন সরকারের সহযোগিতা পাওয়া যাবে কিন্তু তেমনটি হয়নি। তবে একথাও সত্য যে পোল্ট্রি সম্পর্কে কিংবা পোল্ট্রি রিসাইকেল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও যে খুব বেশি ওকিবহাল সেটিও হয়ত বলা যাবেনা।

পোল্ট্রি’র স্বতন্ত্র কোন অস্তিত্বও খুব একটা নজরে পড়েনা। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলেও মাছের একটি পৃথক অধিদপ্তর আছে; গরু, মহিষ নিয়ে চোখে পড়ার মত বড় বড় প্রকল্প আছে কিন্তু পোল্ট্রিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেতরে অনেকটা হাতড়িয়েই খুঁজে বের করতে হয়।

সে কারণেই আমার কাছে মনে হয় পোল্ট্রি নেতৃবৃন্দের উচিত পোল্ট্রি’র একটি পৃথক ‘অধিদপ্তর’ কিংবা নিদেনপক্ষে একটি ‘পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড’ গঠনের দাবিকে জোরালোভাবে উপস্থাপন করা। একই সাথে পোল্ট্রি রিসাইক্লিং এর প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা এবং এ ধরনের প্রকল্পে সরকারিভাবে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টিতেও তাগাদা দেয়া দরকার।  

খুবই সাধারন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পলিথিনের মত জটিল বর্জ্য থেকে জ্বালানী তৈল উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জামালপুরের তরুণ তৌহিদুল। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালি, দিনাজপুর, খুলনা কিংবা রাজশাহীতে কি এমন কেউ নেই যিনি আমাদের এভাবেই তাক লাগাতে পারেন? অপেক্ষায় থাকলাম।