নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ২০২২ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। এফএও’র ৩৫তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক।

১৯৭৩ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থাতে (এফএও) যোগদানের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এই সম্মান পেয়েছে। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে এফএও’র সদস্য হলেও এখন পর্যন্ত কোন সম্মেলন বাংলাদেশে হয় নি।

আজ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২০) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও’র) ৩৫তম এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিমিয়কালে এসব কথা বলেন।

এ সময় কৃষিসচিব মো: নাসিরুজ্জামান, খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এবং এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বছরের প্রাক্কালে এই অর্জন দেশের জন্য বিরাট গর্বের ও সম্মানের। ঢাকায় ৩৬তম অধিবেশন এই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্জন, সাফল্য, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে মতবিনমিয় ও পারস্পরকি সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।

মন্ত্রী বলেন, ৩৬তম সম্মেলন বাংলাদেশে আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবের ওপর চীন, ভারত, ভুটান, ইরান, তিমুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও কম্বোডিয়ার সরাসরি সমর্থন এবং অন্যান্য সদস্যদেশসমূহ সম্মতি প্রদান করে। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আঞ্চলিক সম্মেলন একটি আনুষ্ঠানিক ফোরাম যেখানে সদস্য দেশসমূহের কৃষিমন্ত্রীবৃন্দ এবং অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তাগণ খাদ্য ও কৃষিক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে বৈঠকে মিলিত হন।

ব্রিফিংকালে মন্ত্রী জানান, ভুটান এবারের ৩৫ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন ১-৪ সেপ্টেম্বর সময়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজন করেছে। দুই বছর পর পর এই রিজিওনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৬টি সদস্যদেশের মধ্যে ৪১টি দেশের মন্ত্রিবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাত, সিভিল সোসাইটি, অ্যাকাডেমিয়া এবং খাদ্য ও কৃষি খাতের টেকনিক্যাল এক্সপার্টসহ ৪০০ এরও বেশি প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছে।

তিনি আরও জানান, ৩-৪ সেপ্টম্বরের মন্ত্রী পর্যায়ের সেশনে ৩১ জন মন্ত্রী ও ২৮জন ভাইস মন্ত্রী অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ৬ টি মন্ত্রণালয় যেমন: কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ. বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অংশগ্রহণ করেছে।

মন্ত্রী বলেন, মহামারি করোনা, ঘূর্ণিঝড় আম্পান, চলমান দীর্ঘস্থায়ী বন্যাসহ যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কৃষি মন্ত্রণালয়সহ এর অধীন সকল দপ্তরসমূহ করোনা ঝুঁকির মধ্যেও অত্যন্ত সজাগ, সক্রিয় রয়েছে। ফলে করোনাকালেও আমাদের খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রয়েছে । করোনার কারণে দেশে খাদ্যের কোন সংকট হবে না বলে আশা করি।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৫ তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলনটি ভিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, এমপি’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এমপি, কৃষিসচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান, খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুর রৌফ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ তৌফিকুল আরিফ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব রাব্বি মিয়া, এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ আশফাকুল ইসলাম বাবুল।

প্রথমবারের মতো ‘এফএও’ আয়োজন করবে বাংলাদেশ শিরোনামে সংবাদের তথ্য এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসার মো. কামরুল ইসলাম ভূইয়া।