প্রাণীর প্রজননে একাধিক সেবা

পবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রাণীর প্রজননে একাধিক সেবা মিলবে পবিপ্রবি শিক্ষকের নতুন উদ্ভাবিত ডিভাইসে। প্রাণীর প্রজননের সময়ে স্বল্পমূল্যের এ ডিভাইস ব্যবহার করে খামারিরা সহজেই নানা বিষয় জানতে পারবেন।

পিএসটিইউ ভ্যাজাইনো সারভাইকাল ডিভাইস (PSTU-VCD) নামের ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্ট্রেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অসীত কুমার পাল।



প্রাণী সম্পদের উপর গুরুত্ব দিয়ে উদ্ভাবিত এ ডিভাইসের সাহায্যে সনাতন পদ্ধতি পরিহার করে সহজেই সারভিক্সের অবস্থান নিখুঁত ভাবে জানা যাববে। যা কৃত্রিম প্রজননের সময় এআই গান প্রবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। খুবই সহজলভ্য এ ডিভাইসের মাধ্যমে অত্যন্ত কার্যকরী কাজ করা সম্ভব।

বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতিতে গবাদি প্রাণীর প্রজননের ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতিতে হাতের সাহায্যে পশুর সারভিক্স এর অবস্থান জানতে হয়। দেখা যায় জরায়ু সমস্যার কারণে জন্মকালীন সময় বা জন্মপুর্ববর্তী এবং জন্মপরবর্তী সময় নানা কারণে গবাদি পশু মারা যায়।

এ যন্ত্রের সাহায্যে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাণীর সারভিক্স এর বহির্মুখ দেখা যাবে, সারভাইকাল কৃত্তিম প্রজননে ব্যবহার করা যাবে, ভ্যাজাইনাল ও সারভাইকাল প্রদাহ দেখতে সহায়তা করবে, গর্ভবতী প্রানী বাচ্চা প্রসবের সময় জরায়ু মুখ খুলেছে কিনা দেখতে সহায়তা করবে, কৃত্রিম প্রজননের সময় সারভিক্স এর মধ্যে সহজেই কৃত্রিম প্রজনন পাইপ প্রবেশ করানো যাবে, জরায়ু হতে সংক্রামক দূষিত পদার্থ অপসারণ করতে সহায়তা করবে, কৃত্রিম প্রজনন টেকনিশিয়ানদের কৃত্রিম প্রজননে সহায়তা করবে।

উদ্ভাবিত এ ডিভাইসটি এসএস (স্টেইনলেস স্টিল) পাইপ দ্বারা বিশেষ কৌশলে ও পরিমাপে প্রাণীর প্রজাতি অনুসারে প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ড. অসীত কুমার পালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর সাংবাদিককে জানান, উদ্ভাবিত এ ডিভাইসটি পরিবেশ ও প্রাণীর শরীরের উপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলবে না এবং ডিভাইসটির প্রস্তুত মূল্যও খুবই কম আকারভেদে মাত্র (২০০-৫০০) টাকা।

তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সময়ে এ ধরনের বিভিন্ন ডিভাইস আবিস্কার করলেও তা ছিল উচ্চমূল্যের। যা সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু এ ডিভাইস এর মূল্য কম হওয়ায় মানুষ সহজেই এর ব্যবহার করতে পারবে বলে আমি মনে করি।

প্রসঙ্গত, ড. অসীত কুমার পাল বিভিন্ন প্রজেক্ট এর সাথে যুক্ত থেকে প্রাণী সম্পদের উন্নয়নে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবন মূলক কাজ করে যাচ্ছেন।

এছাড়াও ছাত্রজীবন থেকে তিনি নানা গবেষণামূলক কার্যক্রম এ অংশগ্রহণ করেছেন। থাইল্যান্ডে পিএইচডি করা অবস্থায় পেপার ডিভাইস নামে এক ডিভাইস উদ্ভাবন করেছিলেন।

যার সাহায্যে প্রাণীর ভ্রূণ স্বল্প মূল্যে হিমায়িত করা যায়। বর্তমানেও তিনি বিভিন্ন উদ্ভাবনীমূলক একাধিক প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাণীর প্রজননে একাধিক সেবা মিলবে পবিপ্রবি শিক্ষকের নতুন উদ্ভাবিত ডিভাইসে। এরফলে দেশে খামারিরা নতুন এক সেবা পাবেন।

আরও পড়ুন: বাকৃবি অধ্যাপক ড. মনসুরের ভারতের ‘জাতীয় শিক্ষা’ এবং বিশ্ব শিক্ষা পুরষ্কার’ অর্জন