নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দফায় দফায় পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বৃদ্ধি খামারিদের নাজেহাল করে তুলেছে। চলতি বছরের শুরুতেই বাড়ার পর ফের বাড়লো পোল্ট্রি ফিডের দাম। বস্তাপ্রতি খাদ্যের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা।

আজ শনিবার ( ২৭ মার্চ ২০২১) রাত ১১টার দিকে বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (BPKRJP) এর সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মুহাম্মদ মুহসিন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিপিকেআরজেপি থেকে খাদ্যের দাম বৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। খামারিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সংগঠনটি ক্ষুদে বার্তা প্রকাশ করেছে। বার্তায় বলা হয়েছে, “আবার বাড়ানো হলো খাদ্যের দাম! এতে পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদন খরচ আরোও বৃদ্ধি পাবে। সামনে রমজান মাস। এমনিতেই খামারিরা তাদের উৎপাদন মূল্য পাচ্ছেন না।”

আরোও বলা হয়, “ ভুট্টার মৌসুম শুরু হচ্ছে, নিশ্চিত দাম কমবে। এই মুহূর্তে খাদ্যের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। অপরদিকে করোনার লাগাম টানা যাচ্ছে না। পোল্ট্রির খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে।”

বিপিকেআরজেপি থেকে জানা যায়, প্রতি ৫০ কেজি লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা। যা প্রতি কেজিতে ১ টাকা। সেইসাথে লেয়ার মুরগির প্রতি ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে ৭৫ টাকা।

খামারিরা বলছেন, প্রান্তিক পর্যায় ও বড় খামারিরা ডিম উৎপাদন করেও দাম পাচ্ছেন না। মুরগি পালনে ব্যায় বেড়েছে বহুগুণ। ডিম ও মাংসের দাম কমলেও বাড়ছে বাচ্চা ও ওষুধের দাম। ডিমপাড়া মুরগির এক দিনের বাচ্চার দাম বাড়িয়েছেন হ্যাচারি মালিকরা। তাঁরা সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট করে বাচ্চার দাম বাড়িয়েছেন।

তারা বলছেন, বাচ্চা উৎপাদনকারী হ্যাচারি মালিকদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। আর তা না পারলে খামারির এই লোকসান ঠেকানো সম্ভব নয়। বাচ্চার দাম হাতের নাগালে থাকলে উৎপাদন খরচ কমে যায় এবং লাভবান হওয়া যায়। বাচ্চার দাম ২০-৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকার এর বেশি হয়ে যায় তখন আর লাভের মুখ দেখতে পান না খামারিরা।

ডিম উৎপাদনকারী খামারিরা বলছেন, আমিষের চাহিদা পূরণে ডিমের ভূমিকা অন্যতম। এই সম্ভাবনাময় খাত বর্তমানে নানা সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে। উৎপাদন খরচ তুলতে খাচ্ছেন হিমসিম। এসব মুরগি ১২০ দিন থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে কিন্তু তার আগে মুরগি পালনের যে খরচ পড়ছে তা অত্যাধিক। এরপর ডিম উৎপাদনের পর পর্যাপ্ত দাম মিলছে না। প্রতিপিস ডিম উৎপাদনে খরচ ৬.৫০ টাকা হলেও তা বিক্রি হচ্ছে ৫.৫০ টাকায়। ফলে লোকসান গুণছেন খামারিরা।

মুরগির খাবারের দাম বেড়েই চলে লাগামহীন, বাড়ছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত খরচ, রোগ-বালাইয়ে মুরগি মরে সয়লাব হলেও মিলছে না কোন সরকারি ঋণ। করোনাকালীন ৪ শতাংশ হারে ঋণের ঘোষণা দিলে সরকারি এ ঋণ অধিকাংশ খামারি পান নি। সবমিলিয়ে নতুন করে কেউ আর এই ব্যবসায় পা বাড়াচ্ছেন না বরং বড় মূলধনের ব্যবসায়ীরা মুরগি চাষ বাদ দিয়ে অন্যদিকে ঝুঁকছেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ