বরেন্দ্রে কৃষকের হাসি ফোটাবে

আব্দুল বাতেন, রাজশাহী প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে এখন সুবাস ছড়াচ্ছে চিনি আতব ধান। এতে রঙিন হয়ে উঠেছে কৃষকের স্বপ্ন। এবার বরেন্দ্রে কৃষকের হাসি ফোটাবে চিনি আতব।

বরেন্দ্রজুড়ে সরেজমিনে ঘুরে এমন দৃশ্য ও তথ্য পাওয়া গেলো। চাষিরাও বলছেন, এবারে চিনি আতব ধানের চাষ ও ফলন দুই অনেক ভালো হয়েছে।

তারা জানান, চলতি মৌসুমে সুগন্ধী চিনি আতব ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল ও পোকার আক্রমণ কম থাকায় চলতি মৌসুমে ক্ষেতে চিনি আতবের মাথা ভাল রয়েছে। চিনি আতবের চাহিদা থাকায় বাজারে দামও ভাল মিলবে।



আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলেও চিনি আতব কৃষকের ঘরে উঠতে আরো কিছু দিন সময় লাগবে। বরেন্দ্রের কৃষকেরা জানান, গত কযেক বছরে বরেন্দ্র অঞ্চলে আতব চাষ করে পথে বসেছিল কৃষকেরা।

প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর পোকার আক্রমনের কারণে অনেকেই ঘরে ধান তুলতে পারি নি। একারণে গত বছর থেকে আতব ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রাসারণের তথ্য অনুযায়ী রাজশাহী জেলায় ২০১৫ সাথে আতব চাষাবাদ হয়েছিল ৭২০ হেক্টর জমিতে। ২০১৬ সালে কমে ৬৫০ হেক্টর হয়। ২০১৭ সালে আরো কমে চাষাবাদ হয় ৫২০ হেক্টর। ২০১৮ সালে  চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫০ হেক্টর। চলতি বছর ৯১৭ হেক্টর জমিতে পৌঁছাছে।

এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাটোর ও নওগাঁ জেলায় চিনি আতব চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টরে বেশি জমিতে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে নওগাঁ জেলায়।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক বুড়ান উদ্দিন চলতি মৌসুমে ১৮ বিঘা জমিতে চিনি আতব চাষ করেছেন। কৃষকেরা মনে করছেন, বরেন্দ্রে কৃষকের হাসি ফোটাবে চিনি আতব।

শুক্রবার কথা হয় তার সাথে, আতব চাষী বুড়ান উদ্দিন জানান, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে আতব চাষ করে ফলন ও দাম দুইটো ভাল পাওয়া গেছে। তাই চলতি মৌসুমে জমির পরিধি বাড়াই এবার ১৮ বিঘা জমিতে আতব আবাদ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, অনুকুল আবহাওয়া থাকায় ক্ষেতে আতবের মাথা ভাল আছে। তাই অন্যসব বছরের চেয়ে ফলন ভাল হবে বলে আশা তার। এবং বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ (৪০কেজি) আতব ধান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায়।

এমন আতব চাষ করেছেন শুরু তানোর বুড়ান উদ্দিনই নয়, আবহাওয়া ভালো থাকায় মোটা ধানের পাশাপাশি চিনি আতব চাষ করেছেন শত শত কৃষক। এখন সে চিনি আতবের সুগন্ধীতে ভরপুর হয়ে উঠেছে বরেন্দ্রে আকাশ-বাতাস।

রাজশাহীর তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী জানান, আতব চাষ প্রতিবছরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর আগে কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে আতব চাষীরা লোকসান গুনেছিল।

তিনি আরো জানান, এক বিঘা আতব চাষ করে ১২ থেকে ১৫ মন পর্যন্ত পাওয়া যায়। বাজারে এর দাম প্রতি মণ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তাই অন্য সব ধানের চেয়ে আতব চাষ করে বেশি লাভবান হন কৃষকেরা।

আরও পড়ুন: পেঁয়াজের বিকল্প ‍হিসেবে চিভ চাষ বৃদ্ধিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ