নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে চমক দেখালেন গলাচিপার জাহাঙ্গীর ফরাজি (৪৫)। পরিশ্রম আর বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে হয়েছেন স্বাবলম্বী। ২৪ শতাংশ জমি থেকে আয় করেছেন ২ লাখ টাকা।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ফরাজি তাঁর আত্মীয়ের বাগানে দেখেন বেশ কয়েকটি তরমুজ ঝুলে আছে। অসময়ে এমন তরমুজ দেখে তাঁর আগ্রহ বেড়ে যায়।এরপর নিজের ২৪ শতাংশ জমিতে চাষ করেন তরমুজ।

বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। প্রতিটি তরমুজ বেশ বড়। গড় ওজন ৭-৯কেজি। এমন তরমুজের খেত দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন হরহামেশাই। এ তরমুজ গুণে ও মানে খুবই ভালো এবং বেশ সুস্বাদু বলে জানান এলাকবাসী। মৌসুমী তরমুজের চাইতে মিষ্টি হওয়ায় বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে বলে জানান এই চাষী।

বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ বিষয়ে জাহাঙ্গীর ফরাজীর সাখে কথা বলে জানা যায়, খুলনায় মাছের ঘেরের পাশে তরমুজ খেত দেখে অনুপ্রেরণা জাগে জাহাঙ্গীর ফরাজির। সে মন স্থির করে বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করবে। এরপর মালচিং পদ্ধতিতে ২৪ শতক জমিতে বেড তৈরী করেন। বেড তৈরি করতে তাঁর খরচ হয় মাত্র ৩ হাজার টাকা। ১ হাজার টাকায় পাকিজা কোম্পানীর তরমুজ বীজ কিনে বপন করেন।

জাহাঙ্গীর ফরাজী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, সর্বমোট আমার খরচ হয়েছে ২২ হাজার টাকা। তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ টাকায়। আমি ভবিষ্যতে তরমুজ চাষ করব। বর্তমানে ৮০ শতাংশ জমিতে আবারো তরমুজ চাষ করেছি। এর আগে শশা চাষ করে সফলতা পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আর্থিক কোন সহযোগিতা করেন নি। কিন্তু সার্বক্ষণিক বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেছেন। চাইলে যে কেউ এ তরমুজ চাষ করতে পারেন।

বর্ষাকালে তরমুজ চাষের সুবিধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বছরের অন্য সময়ের চাইতে বর্ষাকালে তরমুজ চাষের সুবিধা হলো পানি দিতে হয় না। সার কম লাগে এবং মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করার কারণে খরচ নাই বললেই চলে। এই তরমুজ চাষের আরেকটি সুবিধা হলো কোন কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। বর্তমানে স্থানীয় লোকজন, সাংবাদিক ও দূর দূরান্ত থেকে তরমুজ ক্ষেত দেখতে অনেক লোক আসছে।

এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ আর এম সাইফুল্লাহ এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, জাহাঙ্গীর ফরাজী আমাদের পরিচিত কৃষক। গত বছর তাঁকে দিয়ে আমরা শশা চাষ করিয়েছিলাম। শশা চাষে সাফল্য এসেছিল। এবার তিনি বর্ষাকালে ২৪ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। বেশ ভালো লাভ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো।

এই কৃষিবিদ আরোও বলেন, উপজেলায় ৪-৫ জন তরমুজ চাষ করেছেন। কিছু চারা বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে। সিজিন্যাল তরমুজের চাইতে এ তরমুজের স্বাদ অনেকটাই বেশি। যে কেউ সবজি, ফলমূল চাষ করতে চাইলে তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা সবসময়ই করা হয়।

বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে চমক দেখালেন জাহাঙ্গীর ফরাজি। তাঁর এ সাফল্য দেখে উপজেলা অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা বর্ষাকালীন সবজি চাষের প্রতি বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ