নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মাথাপিছু ব্রয়লার মাংস খাওয়ার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ইসরাইল (৭২ কেজি), দ্বিতীয় ত্রিনিদাদ ও টোবাগো (৬৫ কেজি) এবং তৃতীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৫৮ কেজি)। আর বাংলাদেশে মাথাপিছু মুরগির মাংস খাওয়ার পরিমাণ মাত্র ২৭ কেজি।

আজ বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগির মাংস নিরাপদ কিনা? বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

প্রেসি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান সরকার দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাবারের নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পুষ্টিসম্মত খাবার হলো মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও শাকসবজি-ফলমূল প্রভৃতি। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির মাংস বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তা ও সহজলভ্য আমিষের উৎস। মুরগির মাংসের মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড, ভিটামিন-মিনারেল, যা শরীর গঠন, মেধা বৃদ্ধি ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

দেশের অধিকাংশ মানুষের আয় কম, যা দিয়ে তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে আমিষসমৃদ্ধ খাবার কিনে খেতে পারে না। তুলনামূলকভাবে সারা পৃথিবীতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত উন্নত জাতের মুরগির মাংস আমিষসমৃদ্ধ ও সস্তা। কাজেই, শ্রমজীবী, সীমিত আয়ের বা কম আয়ের মানুষের জন্য পুষ্টির/আমিষের নিশ্চয়তা দিতে পারে ব্রয়লার মুরগির মাংস। কিন্তু আমাদের দেশে মাথাপিছু মুরগির মাংস খাওয়ার পরিমাণ অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই কম।

কারণগুলো হলো:-

সকল শ্রেণি-পেশার (উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত) মানুষের বদ্ধমূল ধারণা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত মুরগির মাংসে (ফার্মের মুরগি) স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক, ভারি ধাতু প্রভৃতি আছে। খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে নাই বলে মানুষ মনে করে, ফার্মের মুরগির মাংসের স্বাদ কম, এবং এ ধারণা শিশু-কিশোরদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেয়া হয়। অনেক উচ্চবিত্তরা মনে করে, এটা গরীবের মাংস। তথাকথিত অনেক অভিজাতশ্রেণি অহংকার করে বলে, আমরা ফার্মের মুরগি খাই না। অথচ উন্নত বিশ্বের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি আমিষ গ্রহণ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত উন্নত জাতের মুরগির মাংস থেকে।

ধারণা সৃষ্টি করা হয়েছে যে, মুরগির খাবারে ট্যানারির বর্জ্য ব্যবহার করা হয়। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কেননা, দেশে বর্তমানে হাঁস/মুরগির খাবারের চাহিদার পরিমাণ ৯৫ লাখ টন (গবাদিপশুর-১৪৫ লাখ টন, মোট-২৪০ লাখ টন)। অথচ মোট ট্যানারির বর্জ্য হয় মাত্র ৮৫ হাজার টন।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশের জিডিপিতে পোল্ট্রি খাতের অবদান ১.৫ থেকে ১.৬ শতাংশ। এছাড়া, এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ লক্ষ লোক জড়িত। মোট পোল্ট্রি শিল্পের ৪০ শতাংশ ব্রয়লার বা মাংস উৎপাদনকারী মুরগি। দেশে প্রতিদিন প্রায় এক কোটি ব্রয়লার বাচ্চা উৎপাদিত হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ