মেহেরাব হোসাইন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রবি এবং খরিফ উভয় মৌসুমেই সয়াবিন চাষ উপযোগী। বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ ও এটেল দো-আঁশ মাটিতে সয়াবীন চাষ করা যায়। আজ বাংলাদেশে সয়াবিন চাষ পদ্ধতি -পর্ব ১ নিয়ে আলোচনা।
জমি নির্বাচন: দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম।
জমি তৈরি: মাটির প্রকারভেদে ৩-৪ টি চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে এবং আগাছামুক্ত করে বীজ বপন করতে হবে। মই দিয়ে জমি সমান করার পর সুবিধামতো আকারে প্লট তৈরি করে নিলে পরবর্তীতে জমিতে সেচ প্রয়োগ, পানি নিষ্কাশন ও অন্তরবর্তীকালীন পরিচর্যা সুবিধা হয়।
নোট: সেচ দিলে ভালো হয়, তবে সয়াবিন খরা সহনশীল তেল বীজ।সেচ না দিলেও হবে।
বপনের সময়: রবি ও নাবী খরিফ উভয় মৌসুমেই সয়াবিন বপন করা যায়। রবি মৌসুমে পৌষের প্রথম থেকে মাঘ মাসের মাঝামাঝি (ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির শেষ) পর্যন্ত এবং নাবী খরিফ মৌসুমে মধ্য আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি (জুলাইয়ের প্রথম থেকে আগষ্টের শেষ) পর্যন্ত। খরিফ মৌসুমে উল্লিখিত সময়ের আগে বপন করলে ফুল আসতে কিছুটা বিলম্ব হয় বিধায় ফসলের আয়ুকাল দীর্ঘায়িত হয়।
বীজের হার: সারিতে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি একরে ২২ কেজি এবং ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি একরে ২৮ কেজি (নোট: ১ একর সমান ১০০ শতাংশ)
বপন পদ্ধতি: সয়াবীন বীজ সারিতে বপন করা উত্তম, এতে আগাছা দমন সহজ হয়।ফলন ভালো হয় পাশাপাশি ফসল সংগ্ৰহ সহজ হয়। তবে মাসকলাই বা মুগ ডালের মতো ছিটিয়েও বপন করা যায়। সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দুরত্ব রবি মৌসুমে ৩০ সেঃমিঃ দিতে হবে। সারিতে ৩-৪ সেঃমিঃ গভীর করে বীজ বপন করতে হয়। ছিটিয়ে বপন করলে চাষের পর বীজ ছিটিয়ে মই দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দিতে হবে। বপনের পূর্বে ছত্রাক বা কীটনাশক দ্বারা বীজ শোধন করে নিলে ভালো।
(নোট: নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর অঞ্চলে রবি মৌসুমে চাষ আবাদ হয়)
সারের মাত্রা ও প্রয়োগ: জমির উর্বরতা সব জায়গায় সমান নয়। তাই কৃষি পরিবেশ অঞ্চলভেদে সারের মাত্রা বিভিন্ন রকম হয়।
সয়াবিন চাষের জন্য সাধারণভাবে একর প্রতি অনুমোদিত সারের মাত্রা হলঃ
ইউরিয়া ২০-২৫ কেজি
টিএসপি ৬০-৭০ কেজি,
এমওপি ৩৫-৪০ কেজি,
জিপসাম ৩৫-৪৫ কেজি।
(নোট: রাসায়নিক সারসমূহের সাথে পঁচা গোবর বা কম্পোষ্ট সার প্রয়োগ করলে রাসায়নিক সার কম লাগবে) শেষ চাষের পূর্বে রাসায়নিক সার ছিটিয়ে মই দিয়ে মাটি সমান করতে হবে। বিশেষ দ্রষ্টব্য : সয়াবিন চাষে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশে সয়াবিন চাষ পদ্ধতি -পর্ব ১ লিখেছেন মেহেরাব হোসাইন সদর,নোয়াখালী।
এগ্রিকেয়ার/এমএইচ