কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ: তিনদিনব্যাপী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালা ‘উন্নত ভবিষ্যতের পথে টেকসই ও অভিযোজিত কৃষি’ শুরু হয়েছে।

আজ শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) আয়োজন করে এ কর্মশালার। কর্মশালাটি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামছুল আলম।

এসময়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং এসিআই এগ্রিবিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা ড. এফ. এইচ. আনসারি। বাউরেসের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান।

বাউরেস এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরেশ কুমার শর্মার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাউরেস এর সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. এ,কে,এম, মমিনুল ইসলাম। গবেষণার এইচ-ইনডেক্সের ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ হাই ইনডেক্স স্কোরধারী ০৫ জনকে এবং অনুষদওয়ারী সিনিয়র ও জুনিয়র ক্যাটাগরিতে  ১১ জনকে বাকৃবির মোট ১৬জন গবেষককে গ্লোবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ দেয়া হয়।

এছাড়াও কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামারি পর্যায়ের ৪ জন উদ্যোক্তাকে ‘প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরস্কার-২০২২ দেয় হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা প্রকল্প থেকে ইমপ্যাক্ট-ফ্যাক্টর জার্নালে আর্টিকেল প্রকাশ করায় প্রকাশনা খরচ বাবদ ১৫ জনকে ১০০ ডলার সমপরিমাণ টাকা প্রকাশনা ফি দেয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. শামসুল আলম গবেষণায় আরো সাফল্যমন্ডিত হয়ে প্রয়োজনীয় জাত বিশেষ করে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্যের জাত উদ্ভাবন করার দিকে নজর দেন যাতে বিদেশ থেকে যেন আমদানী করতে না হয়।

তিনি উৎপাদন ব্যয় কম কিন্তু উৎপাদিকা বেশী এমন গবেষণা, কৃষিজাত পণ্যের মান উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, সুষম বাজার ব্যবস্থাপনা, পিএইচডি রিসার্স ও মাস্টার্স এর থিসিস এর মান বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বেশি গুরুত্বআরোপ করেন।

প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন পূরণ করতে হলে সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও দেশী-বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কোলাবোরেশানের মাধ্যমে আরও সুচারু ভাবের কাজ করতে হবে।

তিনি আন্ডারগ্রাজুয়েটদের বিশেষ করে ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় যুক্ত করার তাগীদ পোষণ করেন যাতে তাদের দ্রুত কর্ম কর্মদক্ষতা ও জ্ঞানের বিকাশ ঘটতে পারে। গবেষণালব্ধ ফলাফল এর প্রচার বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে গুরুত্ব আরোপ করেন যাতে গ্রাম বাংলার কৃষকের দোরগোড়ায় উন্নত টেকনোলজি সহজেই পৌঁছে যায়। তিনি নবীন শিক্ষকদের গবেষণার কাজে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান। ভবিষ্যতে বাকৃবিকে সাউথ এশিয়ান হাব হিসেবে দেখার আশাবাদও ব্যক্ত করেন।

আজ কর্মশালা উদ্বোধনের দিন জানা যায় বাকৃবি বাউরেস এ যাবৎ ১৯৮৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ৩৪৫৬ টি গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। কর্মশালায় আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি ২০২১ সালে সম্পন্ন হওয়া বাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের সর্বমোট ৪৬৩টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপিত হবে। যে সব প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ২১ টি আন্তর্জাতিক এবং ২৫ টি দেশীও সংস্থা। এছাড়াও কর্মশালায় মোট ১৯ টি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। ভার্চয়ালি অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-গবেষকগণ, বিভিন্ন উদ্যোক্তা কৃষক ও খামারি এবং আমন্ত্রিত অতিথিগণ অংশ নেন।