প্রাণি স্বাস্থ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাছুরের জন্মের পর থেকে যেসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে তার মধ্যে অন্যতম কাফ ডিপথেরিয়া রোগ। বাছুরের কাফ ডিপথেরিয়া রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা, লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো।
মনে রাখতে হবে বাছুরের জন্যে খুবই মারাত্মক একটি রোগ কাফ ডিপথেরিয়া। সাধারণত ৩ মাসের কম বয়সী বাছুরের মুখে তীব্র আকারে সংক্রমনের ফলে রোগটি দেখা যায়। তবে ভিন্ন আকারে কখনও কখনও ৩ মাসের অধিক বয়সের বাছুরের শ্বাসতন্ত্রে রোগটি হয়ে থাকে।
রোগের কারণ: মূলত এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। রোগটির জন্যে দায়ি ফিউজোব্যাকটেরিয়াম নেক্রোফোরাম (Fusobacterium necrophorum) নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া।
কাফ ডিপথেরিয়া রোগের লক্ষণ: রোগটি ৩ মাসের কম বয়সী বাছুরের মুখে হলে যেসব লক্ষণ দেখা যাবে তা হলো:
১. রোগের প্রাথমিক অবস্থায় মুখ মন্ডল ফুলে যায়, কিন্তু দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। ২. জটিল অবস্থায় দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও কাশি, দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, শ্বাস কষ্ট, চর্বণ ও গলধঃকরণ কষ্টকর হয়। কখনও জিহ্বা, তালুতে ঘা দেখা যায় এবং নিউমোনিয়া হতে পারে।
রোগটি ৩ মাসের অধিক বয়সী বাছুরের শ্বাসতন্ত্রে হলে তার লক্ষণসমূহ হলো:
১. পাতলা ও ব্যাথাযুক্ত কাঁশি হয়। ২. দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ৩. ক্ষুধামন্দা ও দুর্বলতা দেখা যায়। ৪. শ্বাস কষ্ট, চর্বণ ও গলধঃকরণ কষ্ট সাধ্য হয়। ৫. কখনও কখনও নিউমোনিয়া হতে পারে।
চিকিৎসা পদ্ধতি: ১. যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করালে ভাল ফল পাওয়া যায়। ২. নিকটস্থ ভেটেরিনারী চিকিৎসকের পরামর্শ ক্রমে ব্যাথানাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যাবে।
প্রতিরোধ/সচেতনতা: ১. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। ২. বাছুরের খাবারপাত্র, পানিরপাত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ৩. বাছুরের মুখের অভ্যন্তরে কোন রকম কাটা-ছেড়া আছে কিনা নিয়মিত দেখতে হবে।
৪. প্রয়োজনে জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত মুখমন্ডল পরিষ্কার করতে হবে। ৫. আক্রান্ত বাছুরকে দ্রুত আলাদা ঘরে সরিয়ে ফেলতে হবে। বাছুরের কাফ ডিপথেরিয়া রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা, লক্ষণ ও চিকিৎসা শিরোনামের সংবাদটির তথ্য প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের লাইভস্টক ডায়েরি থেকে নেয়া হয়েছে।
মনে রাখতে হবে গাভী, বাছুরসহ প্রাণির যে কোন রোগ বালাই হতে দূরে থাকতে দরকার সচেতনতা। আর রোগ হলে অবশ্যই পাশের প্রাণি সম্পদ অফিসে প্রথমে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর এসিডিটি/গ্যাস্ট্রিক জনিত রোগ প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার