বাছুরের জন্মের পর থেকে

মুক্তি মাহমুদ, প্রশিক্ষিত অভিজ্ঞ খামারী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাছুরের জন্মের পর অনেকেই পরিচর্যা ও যত্ন নিযে Mukti mahmudদ্বিধাদ্বন্দে থাকেন। দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিবেন বুঝে ওঠতে পারেন না। আসুন জেনে নেয়া যাক বাছুরের জন্মের পর থেকে সঠিক পরিচর্যার নিয়ম কানুন গুলো।

মনে রাখতে হবে জন্মের পর থেকেই বাছুরের যত্ন খুবই গুরুত্বসহকারে নিতে হবে। যত বেশি যত্ন ও পরিচর্যা করা যাবে সেই বাছুর তত বেশি ভালোভাবে বেড়ে ওঠবে।

আমাদের মধ্যে যারা গরুর খামার পরিচালনায় নতুন এসেছেন সেই সব খামারী ভাইয়েদের বাছুরের ব্যাপারে বিভিন্ন জিজ্ঞাসা থাকে। আজকে এই বাছুর নিয়ে কয়েকটা সাধারণ অথচ জরুরী বিষয় নিয়ে একটু আলোকপাত করছি।

অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন আমাকে মাঝেমধ্যে, বাছুরকে জন্মের পর থেকে কতটুকু এবং কত সময় পর্যন্ত দুধ খাওয়ানো যেতে পারে?

এর উত্তর হলো, প্রতি ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৮ কেজি হিসাবে দুধ খাওয়াতে হবে অর্থাৎ ৪০ কেজি ওজনের বাছুরকে ৩-৩.৫ কেজি দুধ খাওয়াতে হবে। এভাবে তিন মাস পর দুধ ছাড়াতে হবে।

অনেকে জানতে চান, প্রসবের পরপরই বাছুরকে কি খাওয়াতে হবে?

উত্তর হলো, বাছুর দাঁড়ানোর চেষ্টা করার সাথে সাথেই তাকে শালদুধ খাওয়াতে হবে।

অনেকে জানতে চান, জন্মের পর শালদুধ খাওয়ানোর নিয়ম কি?

উত্তরটা হলো, দৈহিক ওজনের ১০% হিসাবে অর্থাৎ ২০-২৫ কেজি ওজনের জন্য ১.২-১.৫ কেজি শালদুধ খাওয়াতে হবে।

আবার অনেকে জিজ্ঞেস করেন দুধ ছাড়ার পর বাছুরকে কতটুকু পরিমাণ কাঁচা ঘাস বা খড় এবং দানাদার খাদ্য ( কাফ স্টার্টার) দেয়া যেতে পারে?

উত্তর হলো, বাছুরকে দৈহিক ওজনের ১.৫% হিসাবে তিন মাস পর থেকে ঘাস/খড় ছোট ছোট করে টুকরা করে এবং দৈহিক ওজনের ১% হিসাবে দানাদার খাদ্য ( কাফ স্টার্টার) খাওয়াতে হবে।

প্রতিটি বাছুরের জন্য কতটুকু জায়গার প্রয়োজন?

উত্তর হলো, প্রতিটি বাছুরের জন্য ৬×৪ ফুট মাপের জায়গা প্রয়োজন।

বাছুরের ঘরের পরিবেশটা কি রকম হওয়া প্রয়োজন?

উত্তরটা হলো, পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো-বাতাসসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রেখে শুকনা টুকরো খড় বা চট বিছানো যেতে পারে, ঘরের গোবর, প্রস্রাব সহ যাবতীয় ময়লা সকাল বিকালে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।

বাছুরের অন্যান্য সাধারণ যত্ন কী হতে পারে?

উত্তরটা হলো সময়মত খাদ্য, পানি, ভিটামিন ও মিনেরালস সাপ্লিমেন্টারী সরবরাহপূর্বক যথাযথ সময়ে বয়সের ভিত্তিতে সকল রোগের জন্য টিকা প্রদান করতে হবে। বড় আকারের খামার গুলিতে সনাক্তকরণের জন্য গায়ে অথবা গলায় নম্বর/ট্যাগ লাগাতে হবে।

দূর্ঘটনা এড়ানো, কোন কোন সময় রোগ এড়ানো এবং পরবর্তীতে অল্প জায়গায় রাখার জন্য বাছুরের শিং কাটতে হবে।

আরও পড়ুন: গবাদি প্রাণিকে পানি পানের সঠিক পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয়তা

আজকের আলোচনা এতোটুকুই আবার অন্য এক পোস্টে বাছুর বিষয়ক জিজ্ঞাসা থাকলে কারও সেই বিষয়ে আলোচনার চেষ্টা করবো যদি সেটা আমার জানা থাকে। ধন্যবাদ সবাইকে।

বাছুরের জন্মের পর থেকে সঠিক পরিচর্যার নিয়ম কানুন শিরোনামের লেখক দেশের অভিজ্ঞ ও শিক্ষিত প্রশিক্ষিত খামারি মুক্তি মাহমুদ খামারের সাথে ১৯৯০ সাল থেকে যুক্ত রয়েছেন। খামারিদের প্রয়োজনে তিনি এরকম পরামর্শমূলক একাধিক লেখা লিখে যাচ্ছেন।