বারি ওলকচু-১ পরিচর্যা এবং

চাষ ব্যবস্থাপনা ও করণীয় ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: যে কোন ফসলের ভালো ফলন পেতে দরকার সময় মতো পরিচর্যা ও রোগ বালাই দমন। আসুন জেনে নেয়া যাক, বারি ওলকচু-১ পরিচর্যা এবং রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের কৌশল সমূহ।

বারি ওলকচু১ বৈশিষ্ট্য: পত্রকগুলি ঘনভাবে বিন্যস্ত, একটার সাথে আরেকটা লেগে থাকে। ভূয়াকান্ডে সাদা ছোপ ছোপ দাগগুলো বড় আকারের এবং অল্প সংখ্যক কাঁটা কাঁটা গঠন থাকে বিধায় ভূয়াকান্ডটি হালকা খসখসে হয়।

প্রধান গুড়িকন্দ বড় আকারের হয়, প্রতিটি গুড়িকন্দ হতে গড়ে ৩-৩.৫ টি করমেল উৎপন্ন করে। গুড়িকন্দের মাংশল অংশ ক্রিম রংয়ের এবং ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। একক গুড়িকন্দের ওজন ২-৫ কেজি।

উপযোগী এলাকা: বাংলাদেশে সব অঞ্চলেই উঁচু জমিতে চাষ করা যায়।

বপনের সময়: মধ্য -মাঘ থেকে মধ্য-ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারি- মধ্য মার্চ) মাস বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। প্রয়োজনে মধ্য-চৈত্র থেকে মধ্য-বৈশাখ (এপ্রিল) মাসেও লাগানো যায় তবে এরপরে রোপণ করলে ফলন কমে যায়। মাড়াইয়ের সময়:  ২১০-২৭০ দিন পর।

বপন/ রোপনের দূরত্ব: অন্যান্য ফসলের মত ওলকচুর জন্য কোন একক দূরত্ব নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বীজের আকারের অসমতার জন্য বিভিন্ন আকারের বীজ বিভিন্ন দূরত্বে বপণ করতে হবে। ফলন: হেক্টর প্রতি ফলন ৪৫-৫৫ টন।

রোগবালাই দমন ব্যবস্থা: রোগবালাই:  লিফ ব্লাইট (পাতা ও ডগা পচা রোগ), কলার রট প্রভৃতি রোগ দেখা দেয়।

দমন ব্যবস্থা: লিফ ব্লাইট: এ রোগে পাতা বেশি আক্রান্ত হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কান্ডতে ও লিফ ব্লাইট রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এ রোগের প্রতিকারের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২.০ গ্রাম ডায়থেন এম-৪৫ বা রিডোমিল এম জেড বা এক্রোবেট এম জেড ছত্রাকনাশক ১৫ দিন পর পর ৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।

কলার রট: এ রোগ শস্যের বৃদ্ধির শেষের দিকে দেখা যায়। এ রোগে মাটির সংযুক্ত স্থান আক্রান্ত হয়। কলার রট রোগে আক্রান্ত গাছ মাটি থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত গাছে ভিটাভ্যাক্স-২০০ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে সিঞ্চন যন্ত্রের সাহায্যে প্রয়োগ করতে হবে।

পোকামাকড় দমন ব্যবস্থা পোকামাকড়: ওলকচুর ক্ষেত্রে কীট পতঙ্গ তেমন কোন সমস্যা নেই।

সার ব্যবস্থাপনা: আশানুরূপ ফলন পেতে হলে নিম্নলিখিত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। হেক্টর প্রতি গোবর বা আবর্জনা পঁচা সার ২০ টন, ইউরিয়া ৩২৫কেজি, টিএসপি ২১০ কেজি, এমপি ১৭৫ কেজি সম্পূর্ণ গোবর এবং ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সারের অর্ধেক জমি তৈরীর সময় প্রয়োগ করতে হবে।

বাকি অর্ধেক বীজ বপনের গর্তে বা লাইনে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সমান বা ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। রোপণের ৮০-৮৫ দিন পর ভালভাবে আগাছা পরিষ্কার করে প্রথমবার এবং ১১০-১১৫ দিন পর দ্বিতীয়বার প্রয়োগ করতে হবে।

পরিচর্যা: বীজ লাগানোর পরে যদি মাটির জো না থাকে এবং বৃষ্টিপাত না হয় তবে সেচ দিতে হবে। দুই সারি বা প্রতি সারির পার্শ্ব দিয়ে হালকা নালা তৈরী করে দিতে হবে যাতে সহজেই বৃষ্টির পানি চলে যেতে পারে। ধান, গমের খড় বা কচুরিপানা দ্বারা আচ্ছাদন (মালচ) দিলে ফলন অনেক গুন বৃদ্ধি করা যায় এবং সহজেই আগাছা দমন করা যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন আচ্ছাদন ব্যবহার করে শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব। জমি সব সময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে।

বারি ওলকচু-১ পরিচর্যা এবং রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের কৌশল শিরোনামের সংবাদটির তথ্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সরিষার হোয়াইট মোল্ড রোগ দমন ব্যবস্থাপনা