বালিযুক্ত জমিতে বাদামের চাষে

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বালিযুক্ত জমিতে বাদামের চাষে লাভ গুণছেন চাষিরা। কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলার মেঘনা উপজেলায় বালিযুক্ত জমিতে বাদামের ব্যাপক চাষ হয়েছে। এতে বেশ লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। খবর: বাসস।

বাসস এ প্রচারিত সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছরে কৃষক এবং কৃষি বিভাগ বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছে। গত বছর এ উপজেলার কৃষকরা বাদাম চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।

কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  অন্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে খরচ কম। এর ফলে ওই উপজেলায় বাদাম চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কৃষকেরা মূলত তাদের পরিত্যক্ত জমিতে বাদাম চাষ করে থাকেন।

তবে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকেরা অন্য জমিতেও এর চাষ শুরু করেছেন। এ ছাড়া বাদামের গাছ জমিতে পচে জমির উর্বরা শক্তি বাড়ে। এতে অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ভালো হয় ।এ বিষয়টা কৃষকরা মাথায় রেখে বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।



কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এবার ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০০০০ টন। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বাদামের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ আশা পোষণ করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা নদীর বুকজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় বালুচর। এসব বালুচরে মাইলের পর মাইল চাষ হচ্ছে চিনা বাদাম। এখানকার উৎপাদিত বাদাম রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। সাদা বালুর জমিনে সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে লতানো বাদামের গাছে। এ উৎপাদিত বাদামের মধ্যে রয়েছে ঝিংগা, বিনা-৪ ও বারি-৮ প্রজাতির বাদাম।

উপজেলার বাটেরচর এলাকার কৃষক রমজান আলী জানান, মেঘনা চরের বালুমাটি চিনা বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আমি এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি।

প্রতিমণ কাঁচা বাদাম বিক্রি হয় ১ হাজার ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৬শ’ টাকায় এবং প্রতিমণ শুকনো বাদাম বিক্রি হয় ১ হাজার ৮শ’ থেকে দুই হাজার ২শ’ টাকায়। এবার ফলন ভালো হওয়ায় এক বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ বাদাম পাওয়া যাবে।

উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভবান হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কৃষক তফাজ্জল মিয়া জানান, বালু মাটিতে অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হয় না।

অন্যান্য ফসল উৎপাদনের চেয়ে চিনা বাদামে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষ করছেন। বাদাম রোপণের পর অন্য ফসলের ন্যায় পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।

বীজ রোপণ আর পরিপক্ক বাদাম উঠানোর শ্রমিক খরচ ছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে। একটি ফসলেই তাদের সারা বছরের সংসার খরচ উঠে আসে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান জানান, বাদাম চাষের জন্য প্রণোদনা স্বরুপ ১শ’ চাষিকে ১০ কেজি করে বীজ ও ১৫ কেজি করে সার, এছাড়াও ফলোআপে ৩শ’ জন চাষিকে ১৪ কেজি করে বাদাম বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বাদাম চাষের জন্য মেঘনার চরাঞ্চল অতি উর্বর জায়গা। বাদাম চাষের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছি।

বালিযুক্ত জমিতে বাদামের চাষে লাভ গুণছেন চাষিরা এ প্রতিবেদনের তথ্য বাসস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: কচুর লতিতে ভাগ্যবদল কুমিল্লার বরুড়ার কৃষকদের