জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: অল্প ক্ষুদা নিয়ে বাসা থেকে বের হলেন, হাতের নাগালে কিছু খাবার পেলেই খাবেন। অথবা পরিবার নিয়ে বের হয়েছেন বাইরে সাড়বেন নাস্তার পর্ব। কিন্তু কোথাও পেলেন অস্বাস্থ্যকর খাবার, আবার কোথাও বা পেলেন অ-উন্নত খাবার। মন পেট কোন কিছুই ভরলো না।

এমন দৃশ্যে বা ঘটনার স্বাক্ষী কমবেশি প্রতিদিনই হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বিশেষ করে পরিবার নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়াই খুবই দুষ্কর। অনেকেই তো বাইরের খাবার না খেয়ে বাধ্য হচ্ছেন বাসায় চুলা জ্বালাতে।

তবে খুব শিগগিরই এমন সমস্যা ও সঙ্কট থেকে মুক্তি মিলছে নগরবাসীর। হাতের নাগালেই জুটবে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি নানা পদের শতভাগ পুষ্টিসমৃদ্ধ সম্পূর্ণ খাঁটি খাবার। বিদেশী প্রযুক্তির আদলে সম্পূর্ণ দেশীয় রিসোর্স ব্যবহার করে খুবই সাশ্রয়ী দামে এসব খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর যেমন তুলতে পারবেন ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

আপনার এলাকাতেই এমন পুষ্টিসমৃদ্ধ মজাদার আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি খাবার মিলবে। ফলে খুব বেশি বেগও পেতে হবে না এমন নিরাপদ উন্নত মানের খাবার পাওয়ার জন্যে।

দেশের পোল্ট্রি শিল্পে যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়াজাত পোলট্রিজাত পণ্যের মেশিনারি এবং কারিগরি সহায়তা দিয়ে গ্রাহকের সর্বোচ্চ আস্থা অর্জন করা অন্যতম বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এক্সন গ্রুপ এমন আয়োজন শুরু করতে যাচ্ছে। আপনার নিজের এলাকাতেই তারা এমন খাবার তৈরি করে হাতে তুলে দিবে।

সম্প্রতি এগ্রো টেক প্রদর্শনীতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে এক্সন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম এর কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন। মেলায় এক্সন গ্রুপের প্যাভিলিয়নে আলাপ হয়। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিসটেন্স জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদসহ অন্যান্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মূলত কৃষিজাত পণ্যের বহুমুখি ব্যবহার ও স্বল্প মূল্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার হাতে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এ কাজটি শুরু করছে এক্সন গ্রুপ।

জাহিদুল ইসলাম জানান, বিদেশী প্রযুক্তি ও কনসেপ্ট গুলো আমরা দেশীয় প্রযুক্তিতে রুপান্তর করে সম্পূর্ণ লোকাল/স্থানীয় রিসোর্স ব্যবহার করে এসব পণ্য তৈরি করে ভোক্তাদের কাছে তুলে ধরছি। স্ন্যাকস ও গ্রিল আকারে খাদ্যপণ্যগুলো ক্রেতাদের প্লেটে যাবে। ফলে নতুনত্বের ছোঁয়াও থাকবে।

পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার ও উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা একে রেডি টু ইট বলছি। বিভিন্ন পাড়া বা মহল্লা, বিদ্যালয়ের সামনে, যেখানে জনসমাগম বেশি থাকে এরকম জায়গায় আমাদের এসব খাবার পণ্য পাওয়া যাবে।

খাদ্যপণ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, হাইজিন মেইনটেইন্স করে নিরাপদ খাবার তৈরি হবে। কোনো আর্টিফিসিয়াল ও ফ্লেভার থাকবে না। শতভাগ স্বাস্থসম্মত নিশ্চিত করেই খাবারগুলো পরিবেশন হবে। ফলে সব বয়সি মানুষেরা এ ধরণের খাবার খেয়ে পেটও ভরাতে পারবেন আবার পুষ্টির উপকরণও পাবেন।

দীর্ঘ ১৬ বছর থেকে দেশের কৃষির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার প্রবল ইচ্ছে থাকা এ উদ্যোক্তা বলেন, আমাদের কৃষিজাতপণ্যকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে এর উপযোগীতা বাড়াতে হবে। তবেই শিল্পটি আরও সমৃদ্ধ হবে।

আমরা যারা দেশের বাইরে যাচ্ছি তারা কিন্তু এসব খাবার খুব স্বাচ্ছন্দ্যে খাচ্ছি। তাহলে নিজ দেশে যদি এমন সমৃদ্ধ খাবার পাওয়া যায় কেন খাবে না। তাও আবার বিদেশের চেয়ে কম দামে। কমিউনিটি ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পাবে আমাদের এই আয়োজনটি।

ইতিমধ্যে মাছের হিমায়িতজাতকরণ খাবার হিসেবে ফিস ফিঙ্গার, ফিস বল, ফিস সসেজ, শ্রিম্প বল, ফিস নাগেটস, ক্যাজুয়ান শ্রিম্প বাইটস এবং ক্রিসপি ফিস বল ভোক্তাদের কাছে তুলে দিয়ে চমক দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিফ অন এ স্টিক, বিফ বাইটস, চিকেন অন এ স্টিক, উংস জাতীয় পণ্য রয়েছে। এবার এসব পণ্যের সাথে যোগ হচ্ছে তাদের নতুন এ আয়োজন।

সততা, কমিটমেন্ট আর স্বল্প মূল্য এই তিন নীতির উপর ভর করে ১৬ বছরে পা দিয়েছে এক্সন গ্রুপ।

দেশে পোল্ট্রি প্রক্রিয়াজাত হিমায়িত মাংসের যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করছে তাদের প্রায় সবাই কারিগরি এবং যান্ত্রিক সহযোগিতা নিয়েছে এক্সন থেকে। এর বাইরে প্রক্রিয়াজাত হিমায়িত খাদ্য তৈরির বিভিন্ন পাউডার ও মসলাজাতীয় উপাদান আমদানি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করছে এক্সন। সম্প্রতি এক্সন মাছের প্রক্রিয়াজাত হিমায়িত খাদ্য তৈরি ও বিপণনও শুরু করেছে। যার ব্র্যান্ড নাম (সিপ)।

যে সময় দেশের অধিকাংশ মানুষ পোলট্রি মাংসের সাথেই খুব বেশি পরিচিত হয়ে উঠে নি সেই সময়েই পোল্ট্রিজাত হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতের স্বপ্ন দেখা জাহিদুল ইসলাম নিজেকে মনে প্রাণে একজন কৃষক ভাবেন। দেশের কৃষিকে সেবা দেয়াই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্য নিয়ে কৃষির পণ্যের বহুমুখি ব্যবহার বৃদ্ধিতে এমন নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহাকের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। এতে যেমন কৃষির কল্যাণ হচ্ছে অপর দিকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারও নিশ্চিত হচ্ছে।