রাজশাহী প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কালবৈশাখী ঝড় আর শিলা বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে রাজশাহীর ক্ষেতের ফসল, আম গাছসহ অন্যান্য গাছপালা। বিশেষ করে শিলা বৃষ্টি পাকা ধানে যেন মই দিয়েছে। ধানের ফলনে অনেক বেশি ক্ষতিতে পরার শঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিলায় পাট, শিলায় ঘরের টিন ফুটো হয়েছে, পানের বরজ, পেঁপে গাছসহ কোনো কিছুই রেহাই পায় নি। গাছ ভেঙে পড়ে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

আজ সোমবার ৩০ এপ্রিল সকালের এই ঝড় ও শিলাবৃষ্টি ক্ষেত খামারের আশির্বাদ না হয়ে অভিশাপে রুপ নিয়েছে। এর পাশাপাশি ছিলো বজ্রপাত ও দমকা হাওয়াসহ ঝড়।

ঝড় ও শিলার তান্ডব চলে মুলত জেলার পবা, মোহনপুর, গোদাগাড়ি, বাঘা ও চারঘাট উপজেলাতে। এছাড়াও সবকটি উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় ঝড় হয়েছে, তবে তা পরিমাণে অল্প। পবা উপজেলার বিলনেপালপাড়া, তেঘর, বসন্তপুর মোহনপুর উপজেলার চাঁদপুর, মাটিকাটা, গোপালপুরে শিলের স্তুপ দেখা যায়।

পবা উপজেলার তেঘর গ্রামের আফাজ উদ্দিন সরকার, বসন্তপুর গ্রামের রিপন সরকার, বিলনেপালপাড়া গ্রামের নুরুল আমিন সিদ্দিকী এবং মোহনপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার সকালে প্রথমে শুকনা ঝড় ও বজ্রপাত, এরপর শিলা ও বৃষ্টি অঝোরে ঝড়তে থাকে।

এতে মাঠের পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাঠের অনেক ক্ষেতের ধান কাটা লাগবে না। এমনকি পাট ক্ষেতের প্রায় গাছেরই আগা ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও আম, লিচু, পেঁপে, ভুট্টা, পটল ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে মোহনপুর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের রফিক উদ্দিন জানান, শিলে পুরাতন ও হালকা টিন ফুটো হয়ে গেছে। আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে গেছে এবং অনেকের টিনের চালা উড়ে গেছে। তিনি বলেন তার জীবনে শিলের এমন ক্ষতি তিনি দেখেননি।

কৃষি বিভাগ বলছে, পাকা ধান ক্ষেত ছাড়া অন্য ফসল স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কৃষি বিভাগ এ পর্যন্ত ক্ষতির পরিমান ঠিক করতে পারেনি। তবে তারা কৃষি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকের আম ও লিচুসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চল থেকে গাছপালা ভেঙে পড়া এবং কাঁচা ঘর-বাড়ির টিনের চালা উড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মনজুরে মাওলা বলেন, সোমবারের ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। অন্য ফসলগুলো রিকোভারী হবে। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারও হাত নেই।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী আনোয়ারা বেগম জানান, ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৩০ নটিক্যাল মাইল। সকাল ৮টা ১৬ মিনিটে ঝড় শুরু হয়। চলে ৮টা ২১ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় বজ্রসহ ভারী বর্ষণ হয়। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর আর বৃষ্টি হয় নি।