খামারের দুধ নষ্ট অথবা

ডেইরি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বিশ্ববাজারে হটাৎ বাড়ছে দুগ্ধপণ্যের দাম। মৌসুমের যে সময়ে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল, ঠিক সে সময়েই নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় দুধ উৎপাদন কমেছে। ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর উৎপাদন প্রবৃদ্ধিও।

গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সর্বশেষ নিলামে এসব পণ্যের দাম বেড়ে আট বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে দুগ্ধপণ্য উৎপাদন ঘাটতি ও সরবরাহ সংকট মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করছে।

পূর্বের নিলামের তুলনায় দুগ্ধপণ্যের গড় দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নিলামে মূল্যসূচক ছিল ১ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে। কিন্তু সর্বশেষ নিলামে সূচক ১ হাজার ৩৯৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধ (ডব্লিউএমপি)।

মূল্যসূচকের তথ্য বলছে, এ নিলামে সর্বোচ্চ ৩৩ হাজার ২০৫ টন দুগ্ধপণ্য সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার ৬৪৪ টন। নিলামে ১৫টি বিডিং রাউন্ডে ১৬৭ জন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এদের মধ্যে জয়ী হয়েছে ১১১ জন। নিলামে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম উঠেছে ৪ হাজার ৪৬৩ ডলারে।

জিডিটি নিলামে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী পণ্য ডব্লিউএমপি। পণ্যটি থেকে খামারিরা সরাসরি মুনাফা লাভ করেন। এবার পণ্যটির দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এটি দুগ্ধপণ্যের গড় দামে প্রভাব ফেলেছে। প্রতি টন ডব্লিউএমপি বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৮২ ডলারে, যা আগের নিলামের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্য দিয়ে পণ্যটির দাম আরেকবার ৪ হাজার ডলারের গণ্ডি পার করল।

এদিকে ননিবিহীন গুঁড়ো দুধসহ (এসএমপি) অন্য সব পণ্যের দামও বেড়েছে। জিডিটি নিলামে দ্বিতীয় প্রভাবশালী পণ্য এসএমপি। সর্বশেষ নিলামে পণ্যটির দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৩ ডলারে। অর্থাৎ এটিও ৪ হাজার ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে।

অন্যদিকে মাখনের দাম ৬ হাজার ডলারের সীমানা পেরিয়েছে। বছরের প্রথম নিলামের তুলনায় পণ্যটির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ১৫৮ ডলারে।

যদিও চেডার পনিরের মূল্যবৃদ্ধিতে এতটা ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়নি। আগের নিলামের তুলনায় পণ্যটির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি টনের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৪৬ ডলার। অ্যানহাইড্রাস মিল্ক ফ্যাটের দাম সামান্য বেড়ে টনপ্রতি গড়ে ৬ হাজার ৭২০ ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের নিলামের তুলনায় দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। নিলামে সুইট হুই পাউডার ও মাখনযুক্ত গুঁড়ো দুধ প্রস্তাব করা হয়নি।

এদিকে টানা দুই বছরের নিরবচ্ছিন্ন প্রবৃদ্ধির পর গত বছরের শেষ দিকে কমতে শুরু করে বৈশ্বিক দুধ উৎপাদন। এটি চলতি বছর উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ২০১৪ সালের পর দুধ উৎপাদনে এমন নিম্নমুখিতা আর দেখা যায়নি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উৎপাদন বিপর্যয়ের কারণে দেখা দিচ্ছে সরবরাহ ঘাটতি। ফলে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক বাজারে। রাবোব্যাংকের প্রান্তিকভিত্তিক বৈশ্বিক দুগ্ধপণ্য শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ