আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মালয়েশিয়া পাম অয়েল উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ। মালয়েশিয়ায় গত মাসে পাম অয়েল উৎপাদন ছিল নিম্নমুখী। ফলে দেশটিকে চাহিদা মেটাতে আমদানি বাড়াতে হয়েছে। এ কারণেই নভেম্বরের শেষ দিকে পাম অয়েলের মজুদ কমেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

রয়টার্সের সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী, গত মাসে দেশটিতে পাম অয়েলের মজুদ এক মাসের ব্যবধানে দশমিক ৪৭ শতাংশ কমেছে। মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৯০ হাজার টনে। ছয় ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের মতামতের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা চালানো হয়েছে।

অক্টোবরের তুলনায় গত মাসে দেশটিতে পাম অয়েল উৎপাদন ৫ শতাংশ কমেছে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ২০ হাজার টনে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক পাম অয়েল অ্যানালিটিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা সাথিয়া ভারকা বলেন, আবহাওয়ায় লা নিনার প্রভাবে গত মাসে জোরদার হয়েছে। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল উৎপাদনে।

গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি ৩ শতাংশ বেড়েছে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টনে। আমদানি ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ রফতানির তুলনায় আমদানি বেড়েছে অন্তত পাঁচ গুণ।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক পাম অয়েল অ্যানালিটিকসের সহপ্রতিষ্ঠাতা সাথিয়া ভারকা বলেন, মৌসুমে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় আগস্টে। এ সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে মাটির আর্দ্রতা ও উর্বরতা বাড়ে, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে চলতি মাসে উৎপাদন বৃদ্ধির গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়তে পারে।

এদিকে গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি কমেছে। এ সময় দেশটি ১৩ লাখ ২০ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ১৪ শতাংশ কম। বিশ্লেষকরা জানান, সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধিজনিত প্রতিযোগিতা বেড়েছে। এ কারণে রফতানিতে পিছিয়ে পড়েছে মালয়েশিয়া।

তথ্য বলছে, গত মাসে মালয়েশিয়ান বাজার আদর্শ পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে টানা চার মাস নিম্নমুখী মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের বাজার।

এদিকে গতকাল ফিউচার মার্কেটে আরো এক দফা বেড়েছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম। মূলত সয়াবিন ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বমুখী বাজার দাম বাড়াতে সহায়তা করেছে।

বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে গতকাল নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দাম ১৫ রিঙ্গিত বা দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৩ হাজার ৯৩০ রিঙ্গিত বা ৮৭৬ ডলার ২৫ সেন্টে।

এর আগে গত সপ্তাহে পণ্যটির দাম ৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল। কারণ শীর্ষ ক্রেতা দেশ চীন বিভিন্ন শহরে কভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন আরোপ করলে পণ্যটির চাহিদা কমে যায়। তবে আগামী দিনগুলোয় পণ্যটির দাম বাড়তে পারে। প্রতি টন ৪ হাজার রিঙ্গিতের গণ্ডি স্পর্শ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ