ডেস্ক প্রতিবেদন: আমরা যেসব ফল বা শাকসবজি খেয়ে থাকি প্রত্যেকটিতেই কিছু না কিছু পুষ্টি রয়েছে। পুষ্টিগুণ ছাড়া খাবার হয় না। কিন্তু কিছু খাবারে পুষ্টির পরিমাণ এত বেশি থাকে যে, যেসব খাবারকে সুপারফুড হিসেবে ধরা হয়। এসব খাবার আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সমগ্র স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করে।

যুক্তরাজ্যের গবেষকরা তাদের গবেষণায় এমনই কিছু খাবারের তালিকা করেছেন। এ প্রতিবেদনে বিজ্ঞানের আলোকে বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১. অ্যালমন্ড ও আখরোট: ফ্যাটি অ্যাসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস অ্যালমন্ড ও আখরোট এই দুটি বাদাম সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এ বাদাম হার্ট ও রক্তনালীর স্বাস্থ্য উন্নত রাখতে সাহায্য করে।

২. আতাফল: সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় আতাফল রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এতে রয়েছে চিনি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং পটাসিয়াম।

৩. বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক কই বা পোয়া মাছ, চিতল বা ফ্ল্যাট ফিশ, কড মাছ, ইল, নীল পাখনার টুনা, বিভিন্ন ধরনের স্যামন মাছ সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম। এসব মাছ তাদের পুষ্টিগুণের জন্য এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

৪. চিয়া সিড বা তিসি বীজ: গত কিছু বছর ধরে অন্যতম সর্বাধিক জনপ্রিয় পুষ্টিকর সুপারফুড হলো চিয়া বীজ। এ ছোট কালো বীজে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবার রয়েছে।

৫. মিষ্টি কুমড়া ও বীজ: আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজের ভালো উৎস মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ। মিষ্টি কুমড়া কাঁচা কিংবা পাকা উভয় ক্ষেত্রেই পুষ্টিগুণে ভরপুর। প্রদাহ-বিরোধী উপাদান এবং উচ্চ পরিমাণে জিংক শরীরে ইমিউন সিস্টেমে সহায়তা করে।

৬. ধনেপাতা: ধনেপাতায় রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি উপকারি খনিজ। এছাড়া ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে-র জোগান দেয় এই পাতা।
আরো পড়ুন : করোনা রোধে খেতে হবে প্রোটিনযুক্ত খাবার

৭. মটরশুটি ও বরবটি: মটরশুটিতে প্রোটিন, উচ্চমাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, মিনারেল এবং দ্রবনীয় ভিটামিন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিমের বিচির কথাও উঠে এসেছে এই তালিকায়।

৮. পাতাসহ পেঁয়াজ: পেঁয়াজ পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের পেঁয়াজ ও এর ডগাসহ ফুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। বিশেষ করে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে-এর ভালো উৎস এটি।

৯. বাঁধাকপি: সব ধরনের বাঁধাকপিই পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে লাল বাধাকপিতে পুষ্টিগুণ একটু বেশি।

১০. হিমায়িত পালংশাক: হিমায়িত পালংশাক পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়া রোধ করে এবং ধরে রাখে। হিমায়িত পালংশাকে ম্যাগনেসিয়াম, ফলেট, ভিটামিন এ, বেটা ক্যারোটিন, জিজ্যানথিন থাকে। আর এজন্যই তাজা পালংশাকের তুলনায় হিমায়িত পালংশাকে বেশি পুষ্টিগুণ থাকে বলে ধারণা করা হয়। তবে তাজা পালংশাকও পুষ্টিগুণে কম নয়। এতে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে।

১১. মরিচ: মরিচের গুড়ায় বিভিন্ন ধরনের ফাইটোকেমিক্যাল- ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন এ থাকে। সেই সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের ফেনেরিক উপাদান। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মরিচ যেমন ইয়ালাপিনো, কাঁচা মরিচে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো পুষ্টিগুণ।

১২. পুদিনাপাতা: পুদিনাপাতার উপাদান হৃদপিন্ডের জন্য উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। ১৩. সরিষা শাক: সরিষা শাকে সিনিগ্রিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে।

১৪. লেটুস পাতা: পুষ্টিগুণে ভরপুর লেটুস পাতা যত তাজা থাকে তত এর পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।
১৫. কলা: বিভিন্ন ধরনের কলায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল এবং ডায়াবেটিক প্রতিরোধী উপাদান।

১৬. টমেটো: কাঁচা এবং পাকা- দুই ধরনের টমেটোই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। তবে পাকা টমেটোর তুলনায় কাঁচা টমোটো বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বলে মতামত বিজ্ঞানীদের।

১৭. ডালিম: ডালিমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়া হার্ট-রক্তনালীর স্বাস্থ্যের উপকার ও প্রদাহবিরোধী উপাদানও রয়েছে এই ফলটিতে। এছাড়া সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় আরো রয়েছে আদা, মিষ্টি আলু, শুকনো খেজুর, গাজর, কচুশাক, ব্রকলি, ফুলকপি, কমলা এবং কমলা জাতীয় ফল। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট