সজিবুল হৃদয়, নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর (নাটোর): আষাঢ় মাস চলে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় বৃষ্টির জন্য হাহাকার নাটোরের লালপুরে। এ অঞ্চলে পাটের ভালো ফলন ভালো হলেও অনাবৃষ্টিতে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

এছাড়া তীব্র তাপদাহ ও খড়ায় মাটি ফেটে চৌচির হচ্ছে। শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ।গত কয়েক বছর পাট চাষে লাভের মুখ দেখলেও এবার লোকসানে আশঙ্কা করছেন তারা।

পাট চাষিরা জানান, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ খাল-বিল, নদী-নালায় পানি না থাকায় বেশ চিন্তিত তারা। পানির অভাবে পাট পচানো নিয়ে শঙ্কায় আছেন। ফলে চাষিরা পাট জাগ দিতে না পেরে জমিতেই ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে পাটের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পড়তে পারেন: এক মাসেই বিক্রি হবে বিনা উদ্ভাবিত পাটশাক

অনেকেই কাঁচা পাট পরিবহন করে বিলের নিচু এলাকায় নিয়ে জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউবা কৃত্রিম উপায়ে সেলো মেশিন দিয়ে পানি তুলে পাট জাগ দেওয়ার জায়গা প্রস্তুত করছে। এতে পরিবহন ও শ্রমিকবাবদ পাটের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

আড়বাব ইউনিয়নের পাট চাষি আব্দুল করিম, বিলামাড়িয়ার নসির উদ্দিন বলেন, এবার পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। পাট ডুবানোর জায়গা নাই। পাট জাগ দিতে না পারলে রং ও মান ভালো হবে না। ভালো দামও পাবো না। এছাড়া জমি থেকে পাট কেটে অনেক দূরে নিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে, এতে বেড়েছে শ্রমিকের মূল্যও। সব মিলিয়ে খরচ বেশি হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৯শ ২০ হেক্টর বেশি। এ বছর হেক্টর প্রতি ২.৪ মেক্ট্রিক টন হারে ১৭ হাজার ৮শ ৮ মেক্ট্রিক টন পাটের আঁশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পড়তে পারেন: ভালো দাম পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকছেন ফুলবাড়ীর কৃষকরা

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরিফুলজ্জামান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, উপজেলায় পাট চাষ এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। মাঠে পাটের অবস্থাও ভাল। এখন পাট কাটার সময় চলছে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে কৃষক পাট নিয়ে হতাশায় রয়েছেন। মৃদু তাপদাহ চললেও আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। আমরা কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এতে যেমন খরচ কম তেমনি পাটের মানও ভালো থাকে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ