নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রোজার শুরুতে বেগুনের দাম এক লাফে পৌঁছে যায় ১০০ টাকায়। মুখরোচক বেগুনি বাঙালির ইফতার আয়োজনের অন্যতম অনুসঙ্গ। ফলে রোজা এলে বেগুনের কদর প্রতিবছরই বেড়ে যায়। তবে, রোজা শেষ প্রায় তারপরেও বেগুন বেগুনের দামে আগুন। এতে খুশি কৃষকরা।

বুধবার সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার নিউমার্কেট বাজার ঘুরে দেখা গেল খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। অবশ্য রোজার আগে ছিল ৫০ টাকা। বাড়তি দামে বেগুন বিক্রি অভিযোগ ক্রেতাদের থাকলেও কৃষকরা বলছেন ঠিক দামেই বিক্রি হচ্ছে।

সকালে পাইকারিতে বেগুন বিক্রি করতে আসেন হাশেম মোল্লা। বেশি দামে বেগুন বিক্রি করতে পেরে খুশি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৮০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করলেও আগের মতো লাভ হয় না। বেগুনের পোকা দমন করা এখন মুশকিল। আগে কম ঔষুধে কাজ হয়ে যেত কিন্ত এখন হয় না। তারপরও এ দাম থাকলে ভালোই হয়।

পড়তে পারেন: বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের কৌশল

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০-২১ মৌসুমে রাজশাহী জেলায় মোট সবজি আবাদ করা হয় ১২ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে বেগুন চাষ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে। জেলায় সবচেয়ে বেশি বেগুন চাষ হয় পুঠিয়া উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

পুঠিয়া ইউনিয়নের বেগুন চাষি জব্বার হোসেন বলেন, বেগুন চাষে খরচ বেড়ে গেছে। বৃষ্টিপাত নাই। নিয়মিত সেঁচ দিতে হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত পোকার উপদ্রব কমবে না। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার সব ধরনের সবজির দাম বেশি। ৫০ টাকা কেজির কম বেগুন বিক্রি করলে খুববেশি লাভ হবে না।

এদিকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহীসহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা এবং ময়মনসিংহ থেকে বেগুন ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার তুলনায় রাজশাহী অঞ্চলে সবজির দাম কম। ট্রাকভর্তি বেগুন চলে যায় ঢাকার কাওরানবাজার, শান্তিনগর, ফার্মগেট বাজারে।

পড়তে পারেন: বেগুনের বাম্পার ফলন পেতে যেসব জাত নির্বাচন করবেন

রাজশাহীর উপশহরের বাসিন্দা সুমন হোসেন বেগুনের দাম শুনে বললেন,  রোজার শুরু থেকেই বেগুন কিনছি। একটা দুটা বেগুন কিনি। বেগুনি করার জন্য কিনতে হয়। না কিনে উপায় নাই। আরেকটু দাম কম হলে ভালো হতো।

বাজারে সবজি কিনতে আসেন আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, এ মৌসুমে বাজারে লম্বা ও গোল দুই ধরনের বেগুনই আছে। তবে বেগুনি বানাতে লম্বা বেগুন কাটতে সুবিধা। সবকিছুর দাম চড়া। শুধু বাজারে কম দাম বলতে শশার দাম কমেছে। শশা ৫০-৬০ টাকা থেকে কমেেএখন ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে বাসাবাড়ির পাশাপাশি রেঁস্তোরা ও খাবারের দোকানেও প্রচুর বেগুন দরকার হয়। বিকাল থেকে দোকানের সামনে টেবিল বসিয়ে বিক্রি হচ্ছে হরেক রকমের ইফতার সামগ্রী। এর মধ্যে বেগুনি আরেকটি মুখ্য উপাদান।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ