নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

মন্ত্রী বলেন, এ খাতে কাজের ক্ষেত্র অনেক বেশি সম্প্রসারিত। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, উদ্যোক্তা তৈরী, বেকারত্ব দূর করা, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করা এবং মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদার বিশাল যোগান দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি মাংস, ডিমসহ দুধ থেকে উৎপাদিত প্রাণিজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আয়োজিত জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উদ্বোধনী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি এসময় বলেন, “একসময় বিদেশ থেকে গবাদিপশু আমদানি না করতে পারলে কোরবানির সময় সংকট সৃষ্টি হতো। বিগত কয়েক বছর আমাদানি ব্যাতিরেকে নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পশু থেকে যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটা একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এসব কিছুই গবেষণাধর্মী অর্জনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। বিএলআরআই এর বিজ্ঞানী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা এ সফলতার অংশ। একারণে কর্মক্ষেত্রে সৃজনশীলতা থাকতে হবে। নতুন ‍কিছু সৃষ্টির মাধ্যমে কাজকে ব্যাপৃত করতে পারলে, বন্ধ্যাত্ব অবস্থাকে উন্মুক্ত করে দিতে পারলে তা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে পারে।”

ঐকান্তিক ইচ্ছা, নিরলস প্রচেষ্টা, অধ্যাবসায়, গভীর আন্তরিকতা ও সততার সমন্বয় করে নিজেকে নিবিষ্ট রাখতে পারলে গবেষকরা আমাদের অনেক কিছু দিতে পারেন বলেও এসময় মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ আবদুল জব্বার শিকদার। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য ও আলোচ্য প্রকল্পের কার্যক্রম সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ।

এছাড়াও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ খাতের বিজ্ঞানী-গবেষক ও উপকারভোগী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকবৃন্দ এবং ইউএসএইড ও এফএও’র প্রতিনিধিগণ কর্মশালায় উপস্থিত থেকে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, বিএলআরআই এর জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রকল্পের অন্যতম প্রধান কার্যক্রম হল প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং নিরাপদ প্রাণিজাত খাদ্য তথা দুধ, ডিম এবং মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বায়োসেফটি লেভেল-৩ (বিএসএল-৩) জুনোসিস ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ গবেষণাগার নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে লাগসই ও কার্যকরী প্রযুক্তি এবং অঞ্চলভিত্তিক প্রাণিরোগ নিয়ন্ত্রণ মডেল উদ্ভাবনের মাধ্যমে আর্থিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান প্রধান জুনোসিস ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগসমূহ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতে নিরাপদ দুধ, ডিম ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রাণিসম্পদ খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা শিরোনামে সংবাদের তথ্য এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার হোসেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ