নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে মুরগির দাম। ব্রয়লারের কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং সোনালী মুরগির কেজিতে কমেছে ২৫ থেকে ২৮ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

মুরগির দাম অনেক বেশি কমে যাওয়ায় খামারিরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না। আর্থিক লোকসানে পরে দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা। অন্যদিকে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও বিভিন্ন সবজির দাম। সবজির চড়া দামের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকেরা খেত থেকে সবজি তুলতে পারছেন না। ফলে সেগুলো ঢাকায় আসছে না। সবজির টান পড়ায় দাম বেড়েছে।

পড়তে পারেন: ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করে কারা, কেন ধরা খায় খামারিরা?

আজ রোববার (২৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া সারাদেশের পোল্ট্রির বাজার দর ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়া বিভিন্ন পণ্যের খুচরা মূল্য যাচাই বাছাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজারে মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, তারা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৫০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ২৭৫ টাকা।

অন্যদিকে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে দেশি মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম। দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা, গরু ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার চিকেন মার্কেটের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, বাজারে বর্তমানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির সরবরাহ প্রচুর। বন্যার কারণে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি হওয়ায় বাজারে মুরগির দাম বেশ কমেছে। দুই সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করেছি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা।

পড়তে পারেন: দাম বেড়েছে পেঁয়াজ তেল চিনি ডিম মুরগির

বর্তমানে বিক্রি করছি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। সোনালি মুরগিও কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে বর্তমানে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বন্যার কারণে খামারিরা ঝুঁকি এড়াতে মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ কারণে ঈদের পর বাজারে মুরগির সংকট দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশ চিকেন ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. ফারুক বলেন, বাজারে বর্তমানে মুরগির দাম অনেক কম। এর পরও বিক্রির পরিমাণ কম। ঈদের আগে আগে মুরগির দাম আরো কমতে পারে।

কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী রবিউল আওয়াল বলেন, বন্যার কারণে প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে। বাজারে এখন আগের তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। গত এক দিনের ব্যবধানে শসা, বেগুন, টমেটু, করলা, কাঁকরোল ও কাঁচা মরিচ খুচরায় কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

পড়তে পারেন: কমেছে চাল-আটা-তেলের দাম, বেড়েছে গরুর মাংসে

তিনি বলেন, খুচরায় বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটু ১৮০ টাকা, কাঁকরোল ও করলা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পটোল, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, গাজর দেশি ৬০ টাকা, গাজর চায়না ১৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লতি ৫০ টাকা, কুমড়া পিস ৪০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের সবজি বিক্রেতা আলম হোসেন বলেন, বেগুন কেজি ৮০ টাকা, টমেটো ১৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটোল ও কাঁকরোল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা ও শসা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ওই বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বাড়লেও রসুন ও খোলা আটার দাম কমেছে। পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায়, আলু পাঁচ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে দেশি রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল, ডাল, ডিমসহ অন্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ