নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: এক সপ্তাহ আগের তুলনায় আজ রাজশাহীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির প্রতিকেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। অপরদিকে ডিমের দামে কোন পরিবর্তন না হয়ে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিম-মুরগির দাম শীঘ্রই বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত কোরবানির ঈদের আগে মুরগির দাম কমেছিল। এরপর ধীরে ধীরে বাজার স্বাভাবিক হয়। অন্যদিকে পোল্ট্রি ফিডের দাম হয়ত কমবে; এমন আশায় ছিলেন খামারিরা। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। উল্টো খাদ্যের দাম বাড়তি রেখে কমে গেছে মুরগির দাম। এরইমধ্যে ফের ডিম-মুরগির দাম বাড়বে বলে সুখবর দিয়েছেন পোল্ট্রি খাত সংশ্লিষ্টরা।

অন্যান্য মুরগির দাম বাড়তি থাকায় মাংস উৎপাদনের দিকে যেমন, ব্রয়লার, সোনালি, কক এসব মুরগির বাচ্চা আবারো খামারে তুলতে শুরু করেছেন বলে জানান রাজশাহী পোল্ট্রি এসোসিয়েশন।

পড়তে পারেন: জানুন পোল্ট্রি ফিডের বর্তমান বাজারদর

আজ শনিবার (৬ আগস্ট ২০২২) রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার খুচরা ও পাইকারী দোকান ঘুরে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। খামারি পর্যায়ে ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৩৫ হয়েছে। খুচরা বাজারে এসে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ডিম-মুরগির দাম বাড়ার সম্ভাবনা কতটুকু এ বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হকের সাথে। তিনি এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, চারিদিকে সবকিছুর দাম যেভাবে বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম বাড়তে আর দেরি নেই। অবহেলিত এ খাতের মাথা চাড়া দেওয়ার সময় হয়ত চলে এসেছে। রাজশাহীতে করোনায় ৭০ ভাগ খামার বন্ধ। মাঝখানে উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে গেলো, কারণ ভুট্টা, সয়াবিন মিল, প্রোটিনের দাম বেড়েছে। রেডি মুরগির দাম কমায় খামারিরা আরো বিপাকে পড়েছে। এসব বিপাকের হাত থেকে রক্ষা পেতে ১৪০ টাকা রেডি মুরগি বিক্রি হতে হবে। আর ডিমের পিস ১০ টাকা।

মুরগি দোকানদার মিঠু হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, পোল্ট্রি মুরগি ১৫০ টাকা দরে বেঁচা হচ্ছে। ব্রয়লারের আমদানী আছে দামও আছে। সোনালি মুরগির দাম বাড়ছে কারণ বাজারে সোনালি মুরগি একটু কম। সোনালি ২৫০ টাকা, কক মুরগি ২৫০ টাকা, হাঁস ৩৩০ টাকা, রাজহাঁস ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। দাম আরো বাড়বে এটা নিশ্চিত।

একই বাজারের ফাহিম ডিম ভান্ডারের মালিক মাসুদরানা এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন,  ডিমের দামে খামারিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। খাবারের দাম বেশি থাকলে লাভ কিছুটা কম হয়। লাল ডিম পাইকারিতে হালি ৩৮ টাকা টাকা আর সাদা ডিম ৩৪ টাকা দরে বিক্রি করছি।

পড়তে পারেন: ডিম, মুরগির দাম কমানো বাড়ানোর নেপথ্যে যাদের কারসাজি

রাজশাহীর পবা উপজেলার পোল্ট্রি খামারি ও উদ্যোক্তা মুজিবুর রহমান এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, মূলত প্রান্তিক এক হাজার-দু-হাজার মুরগির খামারিরা ধ্বংশ হয়ে গেছে। বাণিজ্যিকভাবে যেসব মুরগি ও ডিমের উৎপাদন হচ্ছে তা বাজারে আসলে দাম কমার আশঙ্কা রয়েছে। মুরগিতে ১০ টাকা বেড়েছে, আবার শুনছি ১৫ টাকা কমবে। এমন উঠানামার মধ্যেই আছি। এক চালান দাম পেলে পরের চালানেই শেষ! ১১০ টাকা কেজি মুরগি বিক্রি করে কোন লাভ নাই।

খাদ্যের দামে উৎপাদিত মুরগির ডিমের দাম তুলনামূলক ঠিক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা ডিম উৎপাদন করতে লাগে ৭ টাকা ৪০ পয়সা। আর বাজারে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা। ৬০ পয়সা লাভ দিয়ে কোন কিছু করা সম্ভব কি? প্রশ্ন রাখেন তিনি। আমাদের দেশের সিন্ডিকেট সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ৪-৫ দফায় পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়ে এখন আকাশচুম্বী। ১৮’শ টাকার খাদ্যের বস্তা এখন ৩২’শ টাকা।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ