আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারতের এবার জাপানেও বার্ড ফ্লু, মেরে ফেলা হচ্ছে হাঁস-মুরগি। জাপানের খামার মন্ত্রণালয় দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করে হাঁস-মুরগির স্বাস্থ্যগত অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে পোলট্রি খামারগুলোকে। এ ছাড়া খামারগুলো জীবাণুমুক্ত করতেও খামারমালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এবার জাপানেও বার্ড ফ্লু, মেরে ফেলা হচ্ছে হাঁস-মুরগি লেখাটি জাপানের টোকিও থেকে লিখেছেন মনজুরুল হক।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ধুঁকছে জাপান। দেশটিতে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে এবং এর প্রভাবে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার পাশাপাশি বেড়ে চলেছে মৃত্যুর হিসাব। শনিবার এক দিনে শনাক্ত হওয়া নতুন রোগীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যেই দেশটিতে নতুন করে শুরু হয়েছে বার্ড ফ্লুর প্রকোপ।

আরোও পড়ুন: বার্ড ফ্লু: মুরগির ডিম-মাংস কি খাওয়া হয়? নাকি মানুষও আক্রান্ত হবেন?

বার্ড ফ্লুর অধিকাংশ ঘটনা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে দেখা গেলেও এর আগে উত্তরের হোক্কাইডো জেলায় পরিযায়ী পাখির মধ্যে বার্ড ফ্লুর জীবাণু শনাক্ত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের সব জেলার হাঁস-মুরগির মধ্যে এই ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার হুমকি দেখা দিয়েছে। ফলে যেসব খামারে ফ্লু যথেষ্ট মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে, সেই খামারগুলোতে ঢালাওভাবে হাঁস-মুরগি মেরে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। চলতি মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ মুরগি মেরে ফেলার খবর দিয়েছে জাপানের সংবাদমাধ্যম।

অক্টোবরের শেষ দিকে হোক্কাইডোতে বাইরে থেকে আসা পাখির মধ্যে প্রথম বার্ড ফ্লুর জীবাণুর খোঁজ পাওয়া যায়। পরে ৫ নভেম্বর শিকোকু দ্বীপের কাগাওয়া জেলার মিতোইয়া শহরের একটি খামারের হাঁস-মুরগির মধ্যে ফ্লু ছড়িয়ে পড়ে। কিউশু দ্বীপের ফুকুওকা ও মিয়াজাকি জেলা এবং পশ্চিম জাপানের হিওগো, নারা ও হিরোশিমা জেলার খামারেও ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর আসে খামার মন্ত্রণালয়ের কাছে। এ পর্যন্ত ২২টি জেলার মুরগির খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে।

জাপানে প্রথম বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল ২০০৩ সালে। তখন এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। সংক্রমিত খামারের সব হাঁস–মুরগিকে মেরে ফেলে ফ্লুর বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করা হতো। তবে এবারের ফ্লুর ভিন্ন কিছু প্রবণতা নিয়ে পশুচিকিৎসক ও গবেষকেরা উদ্বিগ্ন। মিতোইয়ার খামারে ফ্লু সংক্রমিত হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যে আশপাশের আরও কয়েকটি খামারে তা ছড়িয়ে পড়ে। এখন সংক্রমণ ক্রমশ জাপানের অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে।

আরোও পড়ুন: দেশে বার্ড ফ্লু রোধে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ

জাপানে প্রথম বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল ২০০৩ সালে। তখন এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। সংক্রমিত খামারের সব হাঁস–মুরগিকে মেরে ফেলে ফ্লুর বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে মনে করা হতো। তবে এবারের ফ্লুর ভিন্ন কিছু প্রবণতা নিয়ে পশুচিকিৎসক ও গবেষকেরা উদ্বিগ্ন।

করোনার কারণে জাপানের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা ইতিমধ্যে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। এখন যুক্ত হচ্ছে মুরগি ও ডিমের খামার। ফলে এই খাতের ক্ষতি পোষাতে নতুন প্রণোদনার ঘোষণা হয়তো অচিরেই দিতে হবে জাপান সরকারকে। গৃহপালিত পশুপাখির রোগ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ আইনে যেকোনো খামারে পশুপাখির মধ্যে সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার দেখা দিলে পশুপাখি মেরে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া আছে খামারগুলোর প্রতি। সরকার অবশ্য এ জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে।

তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে ব্যবসায়ীদের অনেকে বলছেন, ক্ষতিপূরণের অর্থে ব্যবসার অবকাঠামো আবার গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। ফলে অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন কিংবা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন। এবার করোনাভাইরাসের মধ্যে বার্ড ফ্লুর প্রকোপ খামারমালিকদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এবার জাপানেও বার্ড ফ্লু, মেরে ফেলা হচ্ছে হাঁস-মুরগি লেখাটি প্রথম আলো থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ