পেঁয়াজের ঊর্ধমুখি দামে আন্তর্জাতিক

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কুইন্টালপ্রতি প্রায় ১ হাজার রুপি বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে ভারি বৃষ্টিপাত ও খরিপ শস্য তোলায় বিলম্বের কারণে দামে এ প্রভাব পড়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে মানি কন্ট্রোল

ভারতের ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৪ রুপি ও মুম্বাইয়ে ৫০ রুপি দরে বিক্রি হচ্ছে। জানুয়ারিতে উভয় শহরে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম ছিল যথাক্রমে ৩৯ ও ৪৩ রুপি।

গত ৩০ জানুয়ারি নাগাদ ভারতে পেঁয়াজের দাম কুইন্টালপ্রতি ২ হাজার ৭০০ রুপি থাকলেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দাম ৩ হাজার ৫০০ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য সপ্তাহের শেষের দিকে দাম কমে ৩ হাজার ২৬০ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। নাসিক জেলায় পেঁয়াজের দাম ৩ হাজার ৫০ থেকে ৩ হাজার ২০০ রুপিতে ওঠানামা করছে।

চেন্নাইভিত্তিক রাজাথি গ্রুপের পরিচালক মদন প্রকাশ বলেন, গত মাসে প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোয় ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজ আসতে বিলম্ব হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে বৃষ্টিপাত হয়েছে যা অস্বাভাবিক। নাসিকের মতো প্রধান পেঁয়াজ আবাদকেন্দ্রে আট মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ন্যাশনাল হর্টিকালচারাল অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এনএইচআরডিএফ) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডক্টর পিকে গুপ্ত বলেন, গত মাসের বৃষ্টিতে মাঠে খরিপ পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাজাথি গ্রুপের পরিচালক জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের পেঁয়াজের দর উঠছে টনপ্রতি ৬০০ ডলার বা ৪৩ হাজার ৭০০ রুপি। অন্যদিকে চীন ও পাকিস্তানের পেঁয়াজ টনপ্রতি ৪০০-৪২৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজারমূল্যে পেঁয়াজ রফতানি বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নয়।

এদিকে নাসিক জেলার ইউনিয়ন ট্রেডার্স চেয়ারম্যান শোহনলাল ভাণ্ডারি জানান, বর্তমানে রফতানি চাহিদা প্রত্যাশিত মাত্রায় নেই। এজন্য চলতি মাসের শুরুতে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও মাসের মাঝামাঝি থেকে কমতে শুরু করবে।

২০২১ সালের ১ জানুয়ারি রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর থেকে পেঁয়াজ রফতানি ধীরে ধীরে বেড়েছে। খুচরা মূল্য বৃদ্ধিতে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের কিছু জায়গায় পেঁয়াজের দাম ১০০ রুপি ছাড়ায়। পরবর্তী সময়ে সরকারি পদক্ষেপে ধীরে ধীরে দাম কমতে থাকে।

ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, ১-৫ ফেব্রুয়ারিতে বাজারে পেঁয়াজ উঠেছে ৭০ হাজার ৭৩ টন। গত ২৫-৩০ জানুয়ারিতে বাজারে উঠেছিল ১ লাখ ২৩ হাজার টন। সোহনলাল ভাণ্ডারি জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠলে দাম কমবে।

বিজের মান ও সহজপ্রাপ্যতা নিয়ে ২০১৯ সাল থেকেই সংকটে রয়েছে ভারতের পেঁয়াজচাষীরা। ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টন। তার আগের মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার টন।

চলতি মৌসুমে কী পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এনএইচআরডিএফের পিকে গুপ্ত শঙ্কা প্রকাশ করেন যে আবাদ মৌসুমে ভালো মানের বীজ পাননি কৃষকরা। এতে পেঁয়াজের উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভারতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম শিরোনামে সংবাদের তথ্য বণিক বার্তা থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ