গরুর মাংসের দাম কমানো

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ২০১৬ সাল থেকে দেশে ঢুকছে বিদেশ থেকে আমদানি করা মাংস। এসব মাংসের বেশিভারই আসছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে। ফলে দেশীয় মাংস উৎপাদক খামারিরা মার খাচ্ছে, কেউবা মূলধন হারিয়ে হচ্ছে নিঃস্ব।

জানা গেছে, অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় দেশে ব্যাপকভাবে আমদানি হচ্ছে গবাদি পশুর মাংস। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দেশীয় বাজার থেকে আমদানি মূল্য অনেক কম হওয়ায় মাংস আমদানি ক্রমশ বৃদ্ধির পাশাপাশি চাহিদাও বাড়ছে।

দামে কম হওয়ায় আমদানিকৃত মাংসের চাহিদা বাড়ছে অভিজাত হোটেল, রেস্তোরাঁ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশীয় খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, বাজারে খামারির গরুর চাহিদা কমে গেছে। দাম পাওয়া যাচ্ছে না। গরুকে খাওয়ানোর মূলধন তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন খামারিরা।

মাংস আমদানিকারকরা জানান, শুরুতে ৩/৪ হাজার টন মাংস আমদানি হতো। বর্তমানে বছরে প্রায় ১০/১১ হাজার টন মাংস আমদানি করা হচ্ছে। অধিকাংশ মাংস আসে ভারত থেকে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও কোরিয়া থেকেও সীমিত পরিমাণে আমদানি করা হয় বলে জানা গেছে।

আরোও পড়ুন: গরুর মাংস আমদানির আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান

বর্তমানে দেশে প্রায় ৪৫ জনের মতো ব্যবসায়ী মাংস আমদানির সাথে জড়িত আছেন। আমদানি করা মাংসের দাম কম হওয়ায় দেশে চাহিদা থাকায় আমদানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মাংস আমদানিকারক শামীম আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, বছরে প্রায় ১০ হাজার টনের মতো আমদানি হচ্ছে। তবে আমদানি করা মাংস কোয়ারেন্টাইন করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন হোটেলে আমদানি করা মাংস বিক্রি হয়। চট্টগ্রামে আমদানি করা গবাদি পশুর মাংস মান পরীক্ষার প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি ল্যাব রয়েছে। আমদানিকারক ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, ভারত থেকে গরুর মাংস আমদানি হচ্ছে না। শুধু মহিষের মাংসই আমদানি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, বছরে ৯ হাজার টন মাংস আমদানি হচ্ছে। মাংস আমদানি বন্ধ করতে চাইলে আরপিও প্রদান বন্ধ করতে হবে। যারা আমদানি করছে তারা শুল্ক দিয়ে আমদানি করছে। তবে দেশীয় খামারিদের স্বার্থে আমরা মাংস আমদানি নিরুৎসাহিত করছি।

সাগরিকা গরু ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি শওকত আলী বলেন, আমদানি করা মাংস কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। প্যাকেটজাত এসব আমদানি করা মাংস গরু, মহিষ না অন্য পশুর তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এসব মাংস তারা বিভিন্ন হোটেলে কেজিপ্রতি ৩০০/৩৫০ টাকায় বিক্রি করছে। কিন্তু দেশীয় গরু, মহিষ ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হয়।

ডেইরি খামারি হারুন চৌধুরী বলেন, সরকারিভাবে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ রাখায় দেশীয় খামারে উৎপাদন আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। গত কোরবানিতে দেশীয় পশু দিয়ে চাহিদা মেটানো হয়। এখন দেদারছে মাংস আমদানি ও গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে খামারিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ভারত থেকে চলছে মাংস আমদানি, মার খাচ্ছে খামারিরা সংবাদ তৈরিতে দৈনিক ইত্তেফাকের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ