অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার.কম: সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২১১ কোটি টাকার শুকনো হলুদ আমদানি করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে শুকনো হলুদ আমদানি হয়েছে ১৮ হাজার ৫২২ টন, যার মূল্য ২১১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের দশ মাসে মসলা পণ্যটির আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অন্তত ৩০ শতাংশ নিম্নমুখী ছিল। তবে, আমদানি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন- চাহিদা কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, আমদানীকৃত হলুদ থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত শুকনো হলুদ আমদানি হয়েছিল ২৬ হাজার ৮৬৮ টন, যার মূল্য ছিল ৩০৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছিল ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।

পড়তে পারেন: উচ্চফলনশীল বিনাহলুদ-১, হেক্টরে ফলন ৩৩ টন

ভোমরা বন্দরের অন্যতম মসলা পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান জানান, চলতি অর্থবছর তার প্রতিষ্ঠানে শুকনো হলুদ আমদানি কমেছে। গত অর্থবছর প্রতি মাসে গড়ে ২০০-২৫০ ট্রাক শুকনো হলুদ আমদানি হয়েছে। কিন্তু চলতি অর্থবছর ১৭০-১৮০ ট্রাক শুকনো হলুদ আমদানি হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশীয় বাজারে হলুদের চাহিদা কম থাকায় আমদানি নিম্নমুখী।

সাতক্ষীরা জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারের মসলা পণ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাহা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সমরেশ সাহা জানান, দেশীয় বাজারে গুঁড়ো হলুদের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা কমে গিয়েছে। এতে দামও কিছুটা কম। গতকাল তার প্রতিষ্ঠানে গুঁড়ো হলুদ পাইকারি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৭০ টাকা দরে, যা দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি দরে।

পড়তে পারেন: ১৩২ কোটি টাকার হলুদ আমদানি কমে অর্ধেকে

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় হলুদ উৎপাদন বেড়েছে। চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার টন কাঁচা হলুদ উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত মৌসুমের তুলনায় ২ হাজার টন বেশি। লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে জেলায় ৭৪০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কুমিরা গ্রামের হলুদচাষী সিরাজুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে আড়াই বিঘা জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। পাঁচ টনের বেশি কাঁচা হলুদ উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তিনি। গত মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে হলুদ চাষ করে সাড়ে তিন টন হলুদ উৎপাদন হয়েছিল। সে সময় তার উৎপাদন খরচ বাদে ১৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে হলুদ উৎপাদন লক্ষ্য কিছুটা বেড়েছে। তবে ফসলটি উৎপাদনে সময় বেশি লাগায় হলুদ চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ কম।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ