ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভোক্তা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের মাঝে বৈষম্য না কমলে ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এসময়ে তারা এ বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) নগরীর চান্দগাঁও আ/এলাকাস্থ ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের সাথে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ক্যাব নেতারা এসব মন্তব্য করেন।

তারা বলেন, বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহনে এফবিসিসিআই, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি), সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহনে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহনে বিএমএ, ওষুধ প্রশাসনের সিদ্ধন্ত গ্রহনে ওষুধ শিল্প সমিতি মূল প্রভাবকের ভুমিকা পালন করে যাবতীয় নীতি ও নীতিমালা প্রনয়ণে প্রভাব বিস্তার করে থাকেন।

ফলশ্রুতিতে সরকার সাধারন জনগনের স্বার্থে অনেক পরিকল্পনা নিতে সদিচ্ছা থাকলেও প্রভাবকরা কিছু ব্যবসায়ী ও স্বার্থন্বেষী মহলের স্বার্থে সেগুলোকে কাজে লাগান।

যার কারনে সরকারের অনেক উদ্ভাবনী প্রকল্পের সুবিধা তৃণমূলের সাধারন জনগন পায় না। অন্যদিকে সরকার ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলির জন্য বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট খাতে প্রতিবছর বিপুল পরিমান রাজস্ব বরাদ্দ প্রদান করলেও ভোক্তা সংগঠন ও ভোক্তাদের সচেতনতায় কোন কানাকড়িও জুটছে না।

ফলে পত্রপত্রিকা-টেলিভিশনের চঠকদারী বিজ্ঞাপন, বিক্রয় কর্মীদের মনভোলানো কথা, উপটৌকনের ফাঁদে পড়ে ভোক্তারা অনেক পণ্য কেনায় প্রলুদ্ধ হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।

ফলশ্রুতিতে দেশে একদিকে ভোক্তারা যেমন আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও প্রতারিত হচ্ছেন, অন্যদিকে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসায় বিরূপ প্রতিযোগিতায় সম্মুখীন হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

যা দেশে ন্যায্য ব্যবসার পরিবেশকে বাঁধাগ্রস্থ করছে। সেকারনে দেশে ব্যবসা বানিজ্য খাতে সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে হলে ভোক্তা সংগঠন ও ভোক্তাদেরকে সক্ষমতা ও সচেতনতা বাড়াতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রসারিত করতে হবে।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব  চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলজাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, চিটাগাং ড্রিংকিং ওয়াটার ম্যানুফেকচার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ফয়সুল আবদুল্লাহ আদনান, চট্টগ্রাম আইস বার মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবদুল হান্নান, ক্যাব মহানগর নেতা জানে আলম, সেলিম জাহাঙ্গীর, সেলিম সাজ্জাদ, অধ্যক্ষ ইসমাইল ফারুকী, অধ্যক্ষ মনিরুজ্জমান, আবু ইউনুচ, রুবি খান প্রমুখ।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হাসানুজ্জমান, বিকাশ দাস, নাসরিন সুলতানা এ উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার অভিযান জোরদার করার জন্য হোটেল, রেস্তোরা ও দোকানে পরিদর্শন খাতা রাখা যেখানে ভোক্তা অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসন থেকে পরিদর্শনকালীন সময়ে কি কি অনিয়ম পাওয়া গেছে বা পরামর্শ দেয়া হয়েছিল তা লিপিবদ্ধ থাকবে, বাজার অভিযান চলাকালে শাস্তির আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলির ডাটাবেস করে ফলোআপ অভিযান পরিচালনা করা, একই অপরাধে বারবার দন্ডিত হলে অর্থদন্ডের পরিবর্তে কারাদন্ডের দেবার ব্যবস্থা করা, খাবার পানি, বেকারী, আইস বার, স্ট্রীট ফুড ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখে খোলা খাবারের দোকানে অভিযান জোরদার করা, হোটেল, রোস্তোরা, দোকান-বাজার সমিতি, বেকারী মালিকদের সাথে মতবিনিময়ের পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়ে সচেতনতা কর্মসুচি জোরদার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কনজ্যুমার ক্লাব গঠন, দোকান, হোটেল, ক্লিনিক-ডায়গনিস্টিকগুলিতে মূল্য তালিকা প্রদর্শণ নিশ্চিত করা, আইটি ও অনলাইন কেনা কাটায় প্রতারনা বন্ধে তড়িৎ উদ্যোগ নেয়া, বাজারে ওজন কারচুপি রোধে ভ্রাম্যমান ওজন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেখানে বাজার সমিতি ও ভোক্তা প্রতিনিধির সমঅংশগ্রহন নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।