নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশে গত ১৫ দিনে চালের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও ফের বেড়েছে চালের দাম। তবে, চালের দাম বাড়ার কারণ জানেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের রাজধানী ঢাকা, ধান চালের রাজ্য নওগাঁ ও উত্তরবঙ্গের রাজশাহীতে বেড়েছে চালের দাম।

রাজশাহীর চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম বাড়ার তেমন কোন কারন দেখা যাচ্ছে না। পাইকারি চালের দাম বেশি হওয়ায় আমরা চালের দাম বাড়ছে। এবার দেড়’শ থেকে ২০০ টাকা বাড়লো। মোকামে দাম বাড়ার কারণে খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। মিলাররা চাল ছাড়ছেন না।

রাজধানীর পাইকারি পর্যায়ে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। এর পেছনে নানা যুক্তি থাকলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, মন্দার আতঙ্কে অস্থিরতা বাড়ছে। এদিকে তেলের দামে কোণঠাসা ভোক্তাদের স্বস্তি মিলছে খোলা আটা-ময়দায়।

এক সপ্তাহ আগে আঠাশ চালের ৫০ কেজির বস্তা ৩৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। জিরাশাল ৩৭০০ টাকা ও বাসমতি ৪১০০ টাকা, পায়জাম ৬৬ টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৪১০০, গুটি শরনা ২৮০০ টাকা। প্রায় সব চালের দামেই একটু বাতাস লেগেছে, বেড়েছে কেজিতে এক থেকে ২ টাকা।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

কার্নেল পদ্ধতিতে চালে মেশানো হবে পুষ্টি!

চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে, দাবি মিলারদের

চালের দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট

এবার বৈশ্বিকভাবে বাড়ছে ভাঙা চালের দাম

ঢাকার চাল ব্যবসায়ী হাসানুল জানান, গত সপ্তাহ থেকেই পাইকেরি বাজারে বস্তায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়লেও আমরা বেশি দাম নিতাম না। এখন বস্তায় ১০০ টাকা বাড়াতে দাম বাড়াতে হচ্ছে।

নওগাঁ শহরের পৌর খুচরা চাল বাজারের ব্যবসায়ী মানিক প্রামাণিক বলেন, মিলগেটে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম ২০০-২৫০ টাকা বাড়িয়েছেন মিলাররা। বাড়তি দাম দিলেও আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের তারা চাল দিতে চান না। আবার মিলগেট থেকে বাজার পর্যন্ত চাল আনতে প্রতি ট্রাকে বাড়তি ৮০০-৯০০ টাকা পরিবহন খরচ গুনতে হচ্ছে। বেশি দামে কেনার কারণেই খরচ সমন্বয় করে মানভেদে প্রতি কেজি মোটা ও চিকন চালের দাম ৫-৬ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছি।

নওগাঁ জেলার হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি মণ জিরা ধান ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ১ হাজার ৫৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সম্পা কাটারি ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬৪০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪৬০ টাকায়, অথচ কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৬২০ টাকায়।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, বর্তমানে বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় প্রতিযোগিতামূলকভাবে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আবার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। তাই ধান কেনার পর মিল পর্যন্ত আনতে প্রতি কেজিতে ২ টাকা বাড়তি খরচ যোগ হচ্ছে। পরিবহনের বাড়তি খরচ সমন্বয় করে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম ৩-৪ টাকা বেড়েছে।

সিন্ডিকেট করে চালের দাম মিলাররা বাড়িয়েছে। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। একটা নির্দিষ্ট সময় আমরা মিলে ধান এবং চাল রাখতে পারি। মজুদ করার কোন উপায় নাই। সরকার অভিযান পরিচালনা করুক। যার কাছে মজুদ রয়েছে তার ব্যবস্থা করুক। আমাদের তাতে কোন আপত্তি নেই।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ