ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাঁধতে জানলে সাধারণ ভাতও হয়ে যায় মুখরোচক খাবার। বাংলাদেশ বা ভারত নয় এশিয়ায় চাল উৎপাদনে বিশ্বে নাম ধরে রেখেছে। চালের সাথে সাথে চাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাদ্য বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে। উপমহােদেশে ক্রম পরিবর্তন হওয়া শাসন আমলেও দেখা গেছে ভাত ও চালজাত নানা পদের বিপুল ব্যবহার। এত বছর পেরিয়ে গেলেও চালের সেই ভূমিকা আজও অব্যাহত।এবার আসুন জেনে নিই মাংস বিরিয়ানি বানানোর কায়দা।

মোটা দাগে ভাগ করলে চাল দু’রকমের— সিদ্ধ ও আতপ। ‘বাঙালির খাদ্যকোষ’-এ মিলন দত্ত লিখছেন, ‘‘১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বাংলায় সাড়ে পাঁচ হাজার জাতের ধানের নাম পাওয়া যায়। তার বেশিরভাগই লুপ্ত।’’ তবে এখন যা যা চাল পাওয়া যায়, তা-ও নেহাত কম নয়। বাঙালি রোজকার পাতে সিদ্ধ চালের ভাত খেতে ভালবাসে।

তবে শুধু ভাত নয়, তাকে বাহারি করে তোলাতেই খাদ্যসুখ। খিচুড়ি, পোলাও, বিরিয়ানি এসেছে সেখান থেকেই। প্রাচীন সংস্কৃতে পোলাওয়ের উল্লেখ ছিল ‘পল্লাও’। পল অর্থাৎ মাংস ও অন্ন মিলিয়ে পলান্ন নামটাই বেশি পরিচিত। সাবেক পলান্ন মাংস ছাড়া হত না।

পারস্য থেকে বিরিয়ানি ভারতবর্ষে এসেছিল চতুর্দশ শতকে। বিরিয়ানিতে মাংস ব্যবহার করাই নিয়ম। হাকিম হাবিবুর রহমানের লেখায়, ‘‘ঢাকার বিরিয়ানির নাম ছিল ‘দোগাসা’। ঢাকায় ‘মোতাজান’ নামক যে রঙিন ও মিষ্টি বিরিয়ানি পাওয়া যেত, তার উপাদান ছিল ছাগল, ভেড়া বা দুম্বার গোশত।’’ অর্থাৎ নিজেদের স্বাদ অনুযায়ী বদলে গিয়েছে রান্নার উপকরণ ও পদ্ধতি। ঠিক যেমন পর্তুগিজদের দৌলতে কলকাতার বিরিয়ানিতে আলুর ব্যবহার শুরু হয়েছে।

যেভাবে বানাবেন মাংস বিরিয়ানি:

উপকরণ: সিদ্ধ চাল ২ কাপ, ডিম ১টি, মুরগির মাংস ৩০০-৪০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, কাঁচা লঙ্কা স্বাদ মতো, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, রসুন বাটা ১ কাপ, আদা বাটা আধ কাপ, জিরে বাটা ২ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো অল্প, গোটা জিরে ২ চা চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো স্বাদ মতো, গোটা গরমমশলা প্রয়োজন মতো, নুন স্বাদ মতো, তেল বা ঘি প্রয়োজন মতো।

প্রণালী: সিদ্ধ চাল মাটির খোলায় মুড়ি ভাজার মতো করে ভেজে নিন। চালের গায়ে লালচে ভাব দেখা দিলে নামিয়ে নিন। চাল যেন পুড়ে না যায় বা মুড়ি না হয়ে যায়। ভাজা গরম চাল ঠান্ডা করে ধুয়ে নিন। জল থেকে চাল চেপে চেপে তুলে নিন।

অন্য একটি কড়াইয়ে ঘি অথবা তেল গরম করুন। তাতে কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ দিন। লালচে রং ধরতে শুরু করলে একে একে কাঁচা লঙ্কা, তেজপাতা, গোটা গরমমশলা, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা ও জিরে বাটা দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। ভাজা হলে লঙ্কা গুঁড়ো দিন। লালচে রং আনতে চাইলে কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো দিন।

এর পরে জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, গোটা জিরে, স্বাদ মতো নুন দিয়ে ভাল ভাবে কষতে থাকুন। এখানে প্রয়োজন হলে আরও তেল বা ঘি দেওয়া যেতে পারে। মশলা কষানো হলে মাংসের টুকরো দিন। নেড়ে জল দিয়ে ঢাকা দিন। মাংস থেকে তেল ভেসে উঠলে ধুয়ে রাখা ভাজা চাল দিন। আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন।

এই সময়ে আঁচ একেবারে কম রাখুন। চাল ও মশলা সব মিলেমিশে গেলে জল দিন। জল যেন চালের উপরে ভেসে ওঠে। অতিরিক্ত জল দেবেন না। ঢাকা দিয়ে সিদ্ধ করতে দিন। একটি বাটিতে ডিম ফেটিয়ে সামান্য নুন দিন। ঢাকনা খুলে কড়াইয়ের মাঝে গর্ত করে ফেটানো ডিম দিয়ে দিন। হালকা নেড়ে ঢাকা দিন। ভাত টিপে দেখে নিন সিদ্ধ হয়েছে কি না। না হলে অল্প অল্প গরম জলের ছিটে দিয়ে নিভু আঁচে সিদ্ধ হতে দিন। ঝুরো হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।

মাংস বিরিয়ানি বানানোর কায়দা শিরোনামে সংবাদের তথ্য আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।