২৭ ভাগ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা

অর্থ বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) জন্য সরকারের ব্যাপক প্রণোদনা সত্ত্বেও মাত্র ২৭ ভাগ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ সুবিধা পান।

এক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক অর্থায়ন সুবিধায় এখনো অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যা এসএমইদের ব্যবসার পরিবেশের অন্যতম প্রতিবন্ধক। এছাড়া এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে বড় বাধা হলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আইনগত সহযোগিতা পাওয়া ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা।

সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) ও বিশ্বব্যাংক আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।



ফিন্যান্সিং সলিউশনস ফর মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালাটি রাজধানীর বনানীতে পিআরআই কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকার প্রয়োজন হলে সবার আগে এনজিও অথবা দালালদের কাছে যায়। আমি চিন্তা করে দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও কাগজপত্র চাওয়ার কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে ভয় পান ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা।

তিনি বলেন, এছাড়া ভালো গ্রাহক খুঁজে পাওয়া কঠিন বলে ঝুঁকি নিতে চায় না ব্যাংক। তবে গবেষণার মাধ্যমে ভালো প্রক্রিয়ার সন্ধান মিললে এ খাতে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে সরকার প্রস্তুত।

কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য দেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার ড্যানড্যান চ্যান, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কান্ট্রি ম্যানেজার উইন্ডি ওয়ার্নার।

কর্মশালায় ‘ফিন্যান্সিং সলিউশনস ফর এসএমইস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট মিহাসোনিরিনা অ্যান্দ্রিয়ানাইভো।

‘দ্য কেস অব মালয়েশিয়া’শীর্ষক উপস্থাপনা দেন এসএমই করপোরেশন মালয়েশিয়ার সিনিয়র ম্যানেজার সিভারাও আপারাহু। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সেলিম আরএফ হোসেন, আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরিফ খান এবং প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাহেল আহমেদ।

কর্মশালায় বলা হয়, ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণের আওতায় ছিল ৩ কোটি ৭৭ লাখ সদস্য। সরকারের পদক্ষেপে এসএমইতে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থায়ন ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে তিন গুণ বেড়েছে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১৮ শতাংশ। কিন্তু আনুষ্ঠানিক অর্থায়ন সুবিধায় এখনো সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। মাত্র ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ব্যাংক বা অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ সুবিধা পায়। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে এ হার ৪৪ শতাংশ। এটি এসএমইদের ব্যবসার পরিবেশের অন্যতম প্রতিবন্ধক।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা (২৩ হাজার ৭০০ কোটি) ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আইনগত সহযোগিতা না পাওয়া এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না।



বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান জানান, অল্প টাকা ঋণদানে আগ্রহ কম থাকলেও বেশির ভাগ ব্যাংকই এসএমই ঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করছে।

তিনি বলেন, জামানতবিহীন ঋণের সুযোগ কম। নারীদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণের সুযোগ থাকলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে, তা নেই। আবার সব জায়গায় এ পদ্ধতি ঠিকমতো কাজ করছে না বলেও মনে করেন তিনি।

তরল দুধের ৯৬টি নমুনার ৯৩টিতে ক্ষতিকর উপাদান, প্যাকেটজাতের ৩১টির ১৮টিতেই ভেজাল

বক্তারা বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে এসএমই খাতে আরো বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার। এছাড়া ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের প্রক্রিয়া আরো সহজ করা দরকার। কারণ ঋণ নেয়ার সময় নানা নথিপত্র চাইলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন উদ্যোক্তারা। মাত্র ২৭ ভাগ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ সুবিধা পান উল্লেখ করে বক্তারা এই সংখ্যাটা আরও বাড়ানোর তাগিদ দেন। সূত্র: বণিক বার্তা।