মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারে ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারে ২০ ভাগের অধিক ফলন পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বীজ অনুবিভাগের মহাপরিচালক আশ্রাফ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেছেন, মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ ভাগের অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণে এবং টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে চাহিদামাফিক মানসম্মত বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানো প্রয়োজন।



বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বীজ মেলা ২০১৯ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য ও  এসব কথা বলেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ‘খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে মানসম্মত বীজের ব্যবহার’ প্রতিপাদ্যে রাজধানীর  ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) চত্বরে ২৮ থেকে ৩০ জুন তিনদিনব্যাপি জাতীয় বীজ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

তৃতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৮ জুন) বিকাল ৩টায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জাতীয় বীজ মেলা উদ্বোধন করবেন। মেলা উপলক্ষ্যে বিএআরসি অডিটেরিয়ামে প্রতিপাদ্যভিত্তিক সেমিনারের অনুষ্ঠিত হবে। সকলের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।

আশ্রাফ উদ্দিন বলেন, ফসলের উৎপাদনশীলতার ওপর নির্ভর করে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি। এজন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন বাস্তবমুখী কর্মসূচী ও নীতি বাস্তবায়ন করছে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ করতে মানসম্মত বীজ ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় বিগত দশ বছরে ধান, গম, পাট, ভুট্টা, আলু, সবজি, তৈল ও মসলাসহ বিভিন্ন ফসলের গুনগত মানসম্মত বীজ সরবরাহ দেড়গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরও পড়ুন: তৃতীয়বারের মতো জাতীয় বীজ মেলা, শুক্রবার (২৮ জুন) উদ্বোধন

তিনি জানান, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন ফসলের গুনগত মানসম্মত বীজ উৎপাদনের পরিমান ছিল ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮শ ৭৪ মেট্রিক টন এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১২ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টনের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদিত হয় ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯শ ২২ মেট্রিক টন যা দেড়গুনের বেশি উৎপাদিত হয়।

২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ১২ লাখ ২৭ হাজার ৬শ ৪৪মেট্রিক টনের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদিত হয় ৩ লাখ ০৪ হাজার ২শ ৫৮ যা মোট চাহিদার ২২ দশমিক ৯২ শতাংশ। রপ্তানিকৃত বীজের পরিমান ছিল ২৭ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন। বিগত পাঁচ বছরে আমদানির হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

হাইব্রিড সবজি বীজের চাহিদার প্রায় সবটুকু বেসরকারি সংস্থা মিটিয়ে থাকে। সরকার সাশ্রয়ী এবং সুলভমুল্যে মানসম্মত বীজ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, বর্তমানে দেশে ফরম্যাল সেক্টরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ২৬ শতাংশ মানসম্মত বীজ চাষি পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়।

প্রধান দানাশস্য ফসল ধান ও গমের ক্ষেত্রে মানসম্মত বীজের সরবরাহ যথাক্রমে ৫৩ দশমিক ৭২ শতাংশ ও ৬০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ধান বীজের ক্ষেত্রে মৌসুম ওয়ারী বোরো, আউশ ও আমন মৌসুমে মানসম্মত বীজের সরবরাহ শতকরা হার যথাক্রমে ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ৫৯.৯৮ শতাংশ, ২৯.৭২ শতাংশ।

এছাড়া বাংলাদেশে এসডিজি-২ অর্জনের জন্য ফসলের উচ্চ ফলনশীল জাতের মানসম্মত বীজের সরবরাহ ২০২০-২১ সারে ৪ লাখ ৪ হাজার ৬৩৩ মেট্রিকটন, ২০১৪-২৫ সালে ৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৬০ মেট্রিকটন এবং ২০২৯-৩০ সারে ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬শত ৪৪ মেট্রিক টনে উন্নীত করা প্রয়োজন। যেহেতু মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারে ২০ ভাগের অধিক ফলন মিলবে সেহেতু ভালো বীজের পথে হাটতে হবে।