মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নওগাঁর মান্দায় বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুই মাসে মাত্র ২৭২ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য দপ্তর।

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের সাথে বাজারদরের মিল না থাকায় খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছে না চাষিরা। অন্যদিকে চালের দাম বেশি হওয়ায় চালও দেয়নি মিলাররা। ফলে ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বেশ বেগ পেতে হবেও বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে প্রসাদপুর খাদ্য গুদামে ২ হাজার ৭২৮ মেট্রিকটন ধান ও ৬৯৫ মেট্রিকটন চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে কৃষকদের নিকট থেকে প্রতিকেজি ধান ২৭ টাকা ও মিলারদের নিকট থেকে প্রতিকেজি চাল ৪০ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। নির্ধারিত দরে আজ সোমবার (২৮ জুন) পর্যন্ত এ খাদ্যগুদামে সংগ্রহ করা হয়েছে ২৭২ মেট্রিকটন ধান ৪৩৯ মেট্রিকটন চাল। আগামি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে বলেও জানান তারা।

এদিকে উপজেলার চৌবাড়িয়া, সাবাই, দেলুয়াবাড়ি, প্রসাদপুর, পাঁজরভাঙ্গাসহ বিভিন্ন হাট ঘুরে জিরাশাইল প্রতিমণ ধান ১২২০ টাকা থেকে ১২৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখে গেছে। ব্রিধান-২৮ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা থেকে ১১৫০ টাকা। হাইব্রীড জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা থেকে ১০৫০ টাকা দরে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে প্রকার ভেদে প্রতিমণ ধান ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে হাট-বাজারগুলোতে।

ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, ইউসুফ আলীসহ আরো অনেকে জানান, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় কাটা-মাড়াইয়ের সময় কৃষকরা মাঠেই ধান শুকিয়ে ঘরে তুলেছেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধান হাটে ধান বিক্রির জন্য আনছেন না তারা। এ কারণে হাটবাজারগুলোতে ধানের আমদানি কমে গেছে। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমে যাওয়ায় ধানের বাজার প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

পাঁজরভাঙ্গা হাটে ধান বিক্রি করতে আসা এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক অমল চন্দ্র সরকার জানান, এ মৌসুমে জিরাশাইল ধান ১২৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ দামে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাজারে এ দাম থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। এতে করে কৃষকরা ধানের উৎপাদনে আরো আগ্রহী হবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড জাতের ধানের চাষ হয়েছে ২ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুল ও খেতে রোগবালাই কম হওয়ায় এ চাষ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে চলতি মৌসুমে।

উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মামুন-অর-রশীদ জানান, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে বাজার দরের সামঞ্জস্য নেই। সরু ধানের দাম অনেক বেশি। হাইব্রীড জাতের ধানের দর কিছুটা লেভেল থাকলেও কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি করছেন না। বাজারে এ দর অব্যাহত থাকলে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ