মৎস্য ডেস্ক, এ্রগ্রিকেয়ার২৪.কম: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের শাখাওয়াত হোসেনের মালিকানাধীন ট্রলারের নাম এফবি মায়ের দোয়া। এই ট্রলারেই গভীর সমুদ্রে সাত দিনে ৩৫ মণ ইলিশ ধরেছেন জেলেরা। মাছগুলো ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন তারা।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর মৎস্য বন্দরে মাছগুলো বিক্রি হয়। জেলেরা জানান, প্রতিদিন ইলিশের আশায় সমুদ্রে জাল ফেলছেন। ভরা মৌসুমেও ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। ট্রলারের খরচ না ওঠায় অনেকে সমুদ্রে জাল ফেলা বন্ধ করে দিয়েছেন।

পড়তে পারেন: কেজি ওজনের ইলিশ ৯৪৯ টাকা দরে ভারতে রপ্তানি

জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন পটুয়াখালীর জেলেরা। অনেকে মাছ ধরতেও নামছেন না। তবে হঠাৎ এক ট্রলারে একসঙ্গে ৩৫ মণ ইলিশ ধরা পড়ায় নতুন করে আশার আলো দেখছেন জেলেরা।

ট্রলার মালিক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাত দিন আগে ১৮ জেলে নিয়ে মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যায় ট্রলারটি। বুধবার ৩৫ মণ ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরে এসেছে। এর মধ্যে বড় সাইজের ইলিশ তিন মণ, মাঝারি সাইজের পাঁচ মণ, ছোট সাইজের ইলিশ পেয়েছে ২৭ মণ। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির কিছু ছোট মাছ পেয়েছে। মাছগুলো আলীপুর মৎস্য বন্দরের ঘাটে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। সমুদ্রে বড় সাইজের ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না।

পড়তে পারেন: দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

ট্রলারের মাঝি এমাদুল মিয়া বলেন, ৩৫ মণ মাছ বড় বা মাঝারি সাইজের হলে অন্তত ২০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম। মাছের সাইজ ছোট থাকায় ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তারপরও বেশি মাছ ধরা পড়ায় ট্রলারের জেলেরাও সবাই খুশি।

গলাচিপা উপজেলার গোলখালী এলাকার জেলে রফিক মিয়া বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে কয়েকবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এতে এখন দিনমজুর হিসেবে কৃষি কাজ করছি। তেলের দাম বেশি। তাছাড়া সমুদ্রে আগের মতো ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। যে ইলিশ পাইতাম তা বিক্রি করে আমাদের খরচ টাকা উঠছে না। এতে আমার মতো অনেকে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে।

পড়তে পারেন: ইলিশের কেজিতে কমলো ৪০০ টাকা, বিক্রি চলছে হরদম

কলাপাড়া উপজেলার জেলে বাবুল হাওলাদার বলেন, এর আগে সমুদ্রে গিয়ে তেমন ইলিশ মাছ পাইনি। এতে নাও-জাল (জেলে নৌকা) নিয়ে সমুদ্রে যাওয়া হয়নি। শুনছি, মাছ পড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন করে প্রস্তুতি নেবো।

আলীপুর মৎস্য বন্দরের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, অধিকাংশ ট্রলারের জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না। এতে পেশা পরিবর্তন করছেন অনেকে। আগামীকাল থেকে আবহাওয়া আবার বৈরী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার কারণে সমুদ্র থেকে ট্রলারগুলো ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ