ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাইয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বিতরণের লক্ষ্যে চারা নার্সারীতে রেখে কাগজে কলমে বিতরণ দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মোজাম্মেল হক তার রেজিস্ট্রারে সমস্ত চারা বিতরণ দেখিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। তিনি বলছেন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে নিয়ম রক্ষার্থে চারাগুলো বিতরণ দেখানো হয়েছে।
এদিকে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে কর্তৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চারাগুলো বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ফরেস্টারের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় স্বাভাবিক নিয়মে চারা তৈরীর পাশাপাশি মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বিশ হাজার তিনশত পঁচিশটি ফলজ এবং বনজ চারা তৈরী করে বন বিভাগ। তার ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় নিজস্ব নার্সারীতে চারা তৈরী করা হয়।
চারাগুলো রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মসজিদ, মন্দির, গোরস্থান, শ্মশান, রাস্তাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও স্থাপনার নামে রেজিস্ট্রারে বিতরণ দেখানো হয়েছে।
যদিও চারাগুলো বন বিভাগের নার্সারীতে রয়েছে যা আদৌ সরবরাহ করা হয়নি। কারন হিসেবে দু’বার বন্যায় মাঠ-ঘাট এবং রাস্তা ডুবে যাওয়া, করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বলা হচ্ছে। তবে যাদের নামে বিতরণ দেখানো হয়েছে তিনারা বা প্রতিষ্ঠান সরবরাহ নিতে শুরু করেছেন বলে জানান ফরেস্টার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বাগান সমিতির সদস্য অভিযোগ করে এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, “চারাগুলো এভাবে বিতরণ দেখিয়ে তাদের তাগাদা না দিয়ে অনেকদিন অতিবাহিত হলে তারা ভুলে যাবে। সেই সুযোগে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ফরেস্টার কম দামে চারাগুলো বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিবেন”
বিশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আঃ মান্নান মোল্লা এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, “উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আমাদের নিকট হতে স্বাক্ষর নিয়েছেন ফরেষ্টার। তবে আমি কোন চারা সরবরাহ পাইনি। গাছের চারাগুলো যদি সঠিক ভাবে বিতরন করা না হয় তাহলে মুজিববর্ষের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জিত হবে না বলে আমি মনে করি।”
উপজেলা বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) মোজাম্মেল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, “মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিনামূল্যে বিতরণের লক্ষে বিশ হাজার তিনশত পঁচিশটি ফলজ এবং বনজ চারা তৈরী করা হয়েছে। চারাগুলো বিতরণ না করে রেজিষ্ট্রারে দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। যে সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে বিতরণ দেখানো হয়েছে তারা চারা নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।”
মুজিববর্ষে বৃক্ষরোপণ, নার্সারীতে চারা রেখে কাগজে কলমে বিতরণ দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় বিষয়টিকে সুখকর বলে মনে করছেন না সংশ্লিষ্টরা।
এগ্রিকেয়ার/এমএইচ