ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ। শরীয়তপুরের জাজিরাসহ ছয় উপজেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ ছেড়ে বাড়ছে হালি পেঁয়াজের আবাদ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে শরীয়তপুর জেলায় ৩ হাজার ৭শ’ ৫০ হেক্টরে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৯শ’ ৯৬ হেক্টরে। এর মধ্যে জাজিরায় ৪শ’ ৫০ হেক্টরসহ জেলায় হালি পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে ৯শ’ ৯৫ হেক্টরে।

 মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলনের সপ্তাহকালের বেশি সংরক্ষণ করতে না পারায় কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে তেমন একটা লাভবান হতে পারে না। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে কৃষি বিভাগ গত কয়েক বছর থেকেই সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধিকল্পে কাজ করার ফলে জাজিরাসহ সকল উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে আবাদ। কৃষি বিভাগ আশা করছে হালি পেঁয়াজ আবাদ ব্যাপকভাবে সফল সম্প্রসারণ কমাতে পারে গড়মৌসুমে আমদানি নির্ভরতা ও বৃদ্ধি করতে পারে স্বনির্ভরতা।

জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের আলমগীর কাজী বলেন, আমরা অনেক বছর থেকেই মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করে আসছি। তবে এই জাতের পেঁয়াজ রাখি করা সম্ভব হয়না বলে উত্তোলনের সাথে সাথেই স্থানীয় বাজারসহ পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিতে হয়।

সংরক্ষণ যোগ্য নয় এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তখন পাইকাররা অনেক সময়ই আমাদেরকে উপযুক্ত মূল্য দেয় না। তাই এই বছর দুই বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজের আবাদ করেছি। মুড়িকাটা পেঁয়াজের চেয়ে হালি পেঁয়াজ ঘরে তুলতে সময় একটু বেশি লাগলেও রাখি করে গড়সিজনে বেশি দামে বিক্রি করতে পারব।

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জামাল হোসেন বলেন, জাজিরাসহ শরীয়তপুরে আবাদকৃত পেঁয়াজের অধিকাংশই মুড়িকাটা পেঁয়াজ। আর মুড়িকাটা পেঁয়াজ সংরক্ষণযোগ্য না হওয়ায় উত্তোলনের এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারজাত করতে হয় বলে কৃষক দামও কিছুটা কম পেয়ে থাকেন।

বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানা মুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে জাজিরা উপজেলায় ১৪৭ জন কৃষককে হালি পেঁয়াজের বীজ সহ দেয়া হয়েছে নানা উপকরণ। মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন পেতে ৯০-৯৫ দিন লাগলেও হালি পেঁয়াজের ফলন পেতে সময় লাগে ১২০-১২৫ দিন।

তবে এ জাতের পেঁয়াজ আবাাদ করে কৃষক যেমন নিজস্ব পদ্ধতিতে বছরব্যাপী সংরক্ষণ করে সুবিধামাতো সময় অধিক দামে বিক্রি করতে পারবে, তেমনি এর বীজও সংরক্ষণ করতে পারবে। প্রতি বছরই গড়মৌসুমে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে অধিক মূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়ে। তাই কৃষকের হাতে যখন পেঁয়াজ থাকবে তখন গড়মৌসুমে কমবে আমদানি নির্ভরতা, অর্জন হতে থাকবে স্বনির্ভরতা। গত বছরের তুলনায় এমৌসুমে জাজিরায় প্রায় ১৫ শতাংশ হালি পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ