মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শীতকালে মাছের রোগ বালাই বৃদ্ধি হয়ে থাকে। পানির গুণাগুন ঠিক রাখতে না পারলে মাছের বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বিশেষ করে ছোট মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মৃগেল ও রুই পোনার সাদা দাগ রোগ সম্পর্কে প্রত্যেক মাছচাষির জানা প্রয়োজন।

সাদা দাগ রোগ
আক্রান্ত মাছের প্রজাতি – মৃগেল ও রুই মাছের পোনা।

রোগের লক্ষন ও কারণ
ক. পোনা মাছের আঁইশ, পাখনাসহ সারা দেহে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা দাগ দেখা দেয়।
খ. প্রায় ২ সপ্তাহকালীন সময় অব্যাহত থাকে।
গ. এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত।

চিকিৎসা ও ঔষধ প্রয়োগ
ক. মাছের সংখ্যা কমিয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা। জীবানু মুক্ত পানিতে দুই সপ্তাহের মধ্যে মাছ স্বাভাবিকভাবেই আরোগ্য লাভ করে। বিশেষ কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।

প্রতিষেধক/প্রতিকার
ক. চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পোনা মাছের লালন পুকুর প্রস্তুত করলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব এড়ানো যায়।

শীতে মাছের রোগ প্রতিরোধে ১৮ করণীয়

ভুঁইয়া মো. মাহবুব আলম, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শীতকালে মাছচাষিদের চিন্তার শেষ থাকেনা। পানির গুণাগুণ ঠিক রাখা ও রোগ বালাইয়ের হাত থেকে মাছকে রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শীতে মাছের রোগ প্রতিরোধে ১৮ করণীয় রয়েছে। যেসব অনুকরণ করলে মোটামুটি নিশ্চিন্ত থাকা যায়।

শীতে মাছের ক্ষতরোগ, লেজ ও পাখনা পচা রোগ ও ফুলকা পচা রোগ হয়। এসব রোগ প্রতিরোধের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তাহলো-

১. পুকুরের পরিবেশ ও পানির গুণাগুণ ঠিক রাখা;

২. জলজ আগাছামুক্ত রাখা;

৩. পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ার ব্যবস্থা করা;

৪. অনাকাক্সিক্ষত জলজ প্রাণী অপসারণ করা;

৫. অতিরিক্ত কাদা সরানো;

৬. দুই তিন বছর পর পর পুকুর শুকানো;

৭. নিয়মিত ও পরিমিত চুন প্রয়োগ করা;

৮. মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা;

৯. প্রাকৃতিক খাদ্যের উপস্থিতি পরীক্ষা করা;

১০. হররা টানা;

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

শীতকালে পুকুরের মাছ ও পানির ১০ সমস্যার সমাধান জানুন

শীতকালে মাছের খাবার, অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় যত্ন জানুন

সিলভার কার্প মাছের রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

মাছের ছত্রাকজনিত রোগের সমাধান

১১. পাখি বসতে না দেয়া;

১২. জাল শোধন করে ব্যবহার করা;

১৩. রোগাক্রান্ত মাছ অপসারণ করা;

১৪. সব সময় ঢেউয়ের ব্যবস্থা রাখা;

১৫. পানি কমে গেলে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা;

১৬. ভাসমান খাদ্য প্রয়োগ করা;

১৭. পানি বেশি দূষিত হলে পানি পরিবর্তন করা;

১৮. পুকুরে বিভিন্ন স্থানে একটু গভীর বা গর্ত করা যাতে পানি কমে গেলে মাছ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।

শীত ও গ্রীষ্মে প্রতিদিন পুকুরে যেতে হবে। পুকুরের অবস্থা দেখতে হবে। সাত দিন পর পর মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। আর মাছ সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা হলে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এতে খরচ কমে যাবে, লাভ বেশি হবে।

শীতে মাছের রোগ প্রতিরোধে ১৮ করণীয় ও মৃগেল ও রুই পোনার সাদা দাগ রোগ লিখেছেন মাছচাষি ভুঁইয়া মো. মাহবুব আলম। লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ