এগ্রিকেয়ার২৪.কম ডেস্ক: যশোরে খেজুর গাছের সংকটে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে জেলার শত বছরের ঐতিহ্য খেজুর গুড়ের মেলা। খেঁজুর গাছ রক্ষা, গাছিদের সম্মান ও উৎপাদিত গুড় সঠিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে দুই দিনব্যাপী খেজুর গুড়ের মেলার আয়োজন করেছে চৌগাছা উপজেলা প্রশাসন।

গতকাল সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ খেজুর গুড়ের মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মোস্তানিছুর রহমান, চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল-মামুন হিমেল।

মেলায় চৌগাছা উপজেলার দুই শতাধিক গাছি অংশগ্রহণ করেছেন। গাছিরা নিজেদের তৈরি খেজুর রসের খাঁটি গুড়, নলেন গুড়, পাটালি গুড় ও খেজুরের রস নিয়ে মেলায় অংশ নেন। গাছিরা জানান, খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করতে যে খরচ হয় সে তুলনায় তারা সঠিক দাম পান না।

অন্যদিকে খেজুর গাছ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ না থাকায় দিনের পর দিন খেজুর গাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। খেজুর গাছের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি রস ও গুড়ের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করলে এ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন গাছিরা। মেলায় খেজুরের রস বিক্রি হচ্ছে প্রতি ভাড় ২০০ টাকা ও গুড় বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা দরে।

উপজেলার সলুয়া গ্রামের গাছি রশিদ শেখ বলেন,আমি গত ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটি। কালে কালে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন নিজের তত্ত্বাবধানে ৮০টি গাছ আছে। প্রতি বছর এ ৮০টি গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড় বানাই। গুড় বানাতে যে খরচ হয় সে তুলনায় লাভ হয় না।

পুড়োপাড়া গ্রামের গাছি আব্দুল হামিদ বলেন, আমি ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে গাছ কেটেছি। ৫০ বছরেরও অধিক সময় হয়ে গেছে, এটা আমার পেশা। তবে আগে যেমন গাছ কাটার প্রতি গাছিদের আগ্রহ ছিল এখন আর তেমন আগ্রহ নেই। সঠিক মূল্য না পাওয়ায় আর খেজুর গাছের সংকটে ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে।

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা জানান, যশোর জেলা খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত হলেও নানা কারণে খেজুর গাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। খেজুর গাছ রক্ষার সঠিক ব্যবস্থা না করলে ভবিষ্যতে জেলার ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে ও গাছিদের উদ্বুদ্ধ করতে এ খেজুর গুড়ের মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ