ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ছোলা বা বুট আমাদের দেশে অতি প্রয়োজনীয় একটি ডাল জাতীয় শস্য। বিশেষ করে রমজানের সময় এ ডালের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করলে ছোলার বাম্পার ফলন পাওয়া যায়।

তাই আসুন জেনে নিই যেভাবে ছোলা চাষে অধিক লাভবান হওয়া যাবে:

জমি ও মাটি: ছোলা চাষের জন্য উত্তম মাটি হচ্ছে বেলে দো-আঁশ বা এটেল দো-আঁশ মাটি। ছোলা চাষের আগে জমিতে উত্তম রূপে ৩-৪ বার চাষ ও মই দিয়ে নিতে হবে। এবং জমির মাটি ভালো করে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।

জাত নির্বাচন: আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের ছোলার জাত রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বারি ছোলা-২, বারি ছোলা-৩, বারি ছোলা-৪, বারি ছোলা-৫ ইত্যাদি। এগুলো সবই উচ্চফলনশীল জাত।

বীজ নির্বাচন: ছোলা চাষের জন্য বীজ হতে হবে তেজস্বী, উচ্চগুণমানসম্পন্ন, রোগমুক্ত ও সুস্থ বীজ।বীজবাহিত রোগ এড়ানোর জন্য বপন করার আগে বীজ শোধন করে নিলে ভাল হবে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন কাঁচা ছোলার অবিশ্বাস্য গুণ

বীজের হার: বিঘা প্রতি জমিতে ছোলা চাষের জন্য ৬-৮ কেজি বীজের দরকার হয়।

সময়: ছোলার বীজ বোনার উত্তম সময় অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত।

বীজ বপন: ছোলার বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে দুই ভাবেই বোনা যায়। সারিতে বীজ বপন করলে সারি থেকে সারিরদূরত্ব কমপক্ষে ৪০ সে.মি.হতে হবে। বীজ একটু গভীর করে বপন করতে হবে যাতে করে পাখি নষ্ট না করতে পারে।

সার ও সেচ পদ্ধতি: জৈব সার ছোলা চাষের জন্য উত্তম। মাটির ধরন ও গুণাগুণ অনুয়ায়ী অন্যান্য সার দিতে হবে। তারপর জমিতে রস না থাকলে বীজ বপনের পর ২/১ টা সেচ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে জমিতে যেন বন্যা বা বৃষ্টির পানি জমে না থাকে।

রোগ ও তার প্রতিকার: ছোলার বীজ গজানোর পর বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে পারে। যেমন-ফিউজিয়াম অক্সিসপোরাম (Fusarium Oxysporum) নামক, স্কেলেরোসিয়াম রলফসি নামক, বট্রাইটিস ইত্যাদি প্রজাতির ছত্রাকের আক্রমণে গাছের বিভিন্ন প্রকারের ক্ষতি হয়ে থাকে। এসব রোগে পরিণত বয়সে গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ধীরে ধীরে হলুদ রঙ ধারন করে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন পুষ্টিকর লালশাকের সহজ চাষ পদ্ধতি

আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। শেকড় ও কাণ্ডের সংযোগ স্থলে কালো দাগ পড়ে। এ সকল রোগের লক্ষণ কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফলে দেখা দেয়। এ রোগে ছোলার উৎপাদন অনেক কম হয়। এসব রোগ দেখা দিলে দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে ফসলের ক্ষতি কম হয়। এজন্য উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

পরিচর্যা: জমিতে আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। যাতে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ও ইঁদুরের আক্রমণ কম হয়।

ফসল সংগ্রহ: জমির ফসল পেকে গেলে তা সংগ্রহ করতে হবে। ভাল জাতের ফসল চাষ করলে বিঘা প্রতি ২৪০-২৭০ কেজি ফসল উৎপাদন করা যায়।

যেভাবে ছোলা চাষে অধিক লাভবান হবেন শিরোনামে লেখাটির তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি